
দৈনিক আজকের বাংলা ডেস্ক।।
ফটোঃ আনসপ্ল্যাশ, নাসা।
উপগ্রহ ছবির অনেক উৎস রয়েছে। এখানে বিনামূল্যে এবং সহজে ব্যবহার উপযোগী কয়েকটি অপশন দেয়া হল। সাথে থাকছে একটি তালিকা, যেখানে আপনি অন্যান্য উৎেসের সন্ধান পাবেন।
আর্থ এক্সপ্লোরার: এটি মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভিসের অংশ। এখানে মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছবি পাওয়া যায়। আর আছে, ল্যান্ডস্যাট উপগ্রহের তথ্য এবং নাসার ল্যান্ডডেটা প্রোডাক্টস অ্যান্ড সার্ভিসেসে প্রবেশের সুযোগ। ইউএসজিএস গ্লোবাল ভিজুয়ালাইজেশন ভিউয়ারে (গ্লোভিস) পাবেন রিমোট সেন্সিং ডেটা। ইউএসজিএস আর্কাইভে রয়েছে নাসা ল্যান্ডস্যাট ডেটার একটি পূর্ণাঙ্গ ও সুরক্ষিত সংগ্রহ।
সেন্টিনেল হাব প্লেগ্রাউন্ড: সেন্টিনেল ২/ল্যান্ডস্যাটে তোলা ছবির ব্যবহার উপযোগী সংস্করণ পাবেন এই জায়গায়। বাণিজ্যিক এই সাইট বিনামূল্যে যেসব সার্ভিস দেয় তার মধ্যে রয়েছে, হালনাগাদ ছবি এবং নানান রংয়ের ব্যান্ড ব্যবহারের সুযোগ। ইও ব্রাউজার আপনাকে দেবে টাইমল্যাপ্স রিভিউ ব্যবহারের সুবিধা।
স্পেক্টেটর: “গত মাসে নিউ ইয়র্কের মেঘমুক্ত দিনের ছবি“ – এমন বিবরণ লিখে সহজে উপগ্রহ চিত্র অনুসন্ধান করতে পারবেন, এই ফ্রি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনে। এমনকি পুরনো ছবিও পাওয়া যায় সাইটটিতে। আরও জানতে দেখুন এই ইউটিউব ভিডিও। আপনার আগ্রহের এলাকা এবং কোন উপগ্রহ ব্যবহার করতে চান তা ঠিক করে, নিজেই একটি চ্যানেল তৈরি করতে পারেন। তবে এজন্য একটি অ্যাকাউন্ট (বিনামূল্যে) খুলতে হবে।
কোপারনিকাস: এই সাইটে পাবেন ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি এবং কোপারনিকাসের ছয়টি সেন্টিনেল উপগ্রহ থেকে তোলা সব ছবি। ল্যান্ডস্যাটের চেয়ে এর রেজ্যুলুশন ভালো। কিভাবে ফ্রি ছবি ডাউনলোড করবেন, জানতে দেখুন জিআইএসজিওগ্রাফির এই ব্যাখ্যা।
গুগল আর্থ ইঞ্জিন: ”প্ল্যানেটারি-স্কেলে বিশ্লেষণের ক্ষমতাসহ” স্যাটেলাইট ছবি এবং ভৌগলিক ডেটাসেটের একটি বড় ক্যাটালগ পাবেন এখানে। আর্থ ইঞ্জিন গবেষণা, শিক্ষা এবং অলাভজনক কাজে ব্যবহারের জন্য ফ্রি। কিন্তু অ্যাপ্লিকেশন লাগবে। ঐতিহাসিক স্যাটেলাইট ছবির জন্য এটি ভালো। আর গুগল আর্থ, একটি ভার্চুয়াল গ্লোবের মধ্যদিয়ে ভ্রমণের উপভোগ্য অভিজ্ঞতা দেবে আপনাকে।
গুগল ম্যাপ: এটি বিস্তারিত মানচিত্র এবং ছবি যোগান দেয়। গুগল স্ট্রিট ভিউতে পাবেন গ্রাউন্ড লেভেল, অর্থাৎ ভূমির সমান্তরাল ইমেজ। কিছু জায়গার পুরনো ছবিও এখানে পাওয়া যায়।
বিং: এটি মাইক্রোসফটের ম্যাপ এবং স্ট্রিট ভিউ সেবা। বেলিংক্যাট (অনলাইন অনুসন্ধানে একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থা) এর মতে, “গুগলের চেয়েও হালনাগাদ এবং উচ্চতর রেজ্যুলুশনের ছবি পাওয়া যায় বিংয়ে।” উদাহরণ: ইরাক।
উইকিম্যাপিয়া: একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন উদ্যোগ। তাদের সব কনটেন্ট সবার জন্য উন্মুক্ত। এই কোলাবরেটিভ (সহযোগিতামূলক) ম্যাপিং প্রকল্প, বিশ্বের সমস্ত ভৌগোলিক বস্তুকে চিহ্নিত করে এবং তাদের সম্পর্কে একটি ব্যবহার উপযোগী বর্ণনা দেয়। এর সাথে উইকিপিডিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। ওয়েবসাইটটি গুগল ম্যাপ এপিআই ব্যবহার করে। তাদের ইন্টারঅ্যাকটিভ ম্যাপে গুগল ম্যাপের স্যাটেলাইট ছবি ও অন্যান্য রিসোর্সের উপরে ইউজারদের দেয়া তথ্যের স্তর থাকে। এটি একাধিক ভাষায় পাওয়া যায়।
টেরাসার্ভার ডট কম: অনুসন্ধানযোগ্য ছবির বিশাল লাইব্রেরি, কিন্তু সবার জন্য উন্মুক্ত তথ্য খুব বেশি নয়। তবে, কিছু সাংবাদিক টাকা দিয়ে এই সেবা সাবস্ক্রাইব করেন। তাদের মতে, এটি ভালো বিনিয়োগ। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে এটি ব্যবহারে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যাতে অনেকেই হতাশ হয়েছেন।
নাসা আর্থ ডেটা: নাসা থেকে প্রায় রিয়েল টাইম ছবি ভিজ্যুয়ালাইজ করতে পারে ওয়ার্ল্ড ভিউ। স্যাটেলাইট ও এরিয়াল ছবির বিশাল এই ভান্ডারে বিশদভাবে অনুসন্ধানের সুবিধা এবং নানা রকমের ম্যাপিং ও ভিজ্যুয়ালাইজেশন টুল আছে। যেমন অগ্নিকান্ড দৃশ্যায়নের টুল, ফার্মস (FIRMS)। ডজনের বেশি নাসা তথ্য কেন্দ্র এবং সংশ্লিষ্ট স্যাটেলাইট ডেটা প্রোডাক্টে প্রবেশের সুযোগ দেয় এই সাইট। আর নাসা আর্থ অবজারভেশন্স দেবে বায়ুমন্ডল, ভূমি, মহাসাগর, জ্বালানী, পরিবেশ এবং অন্যান্য বিষয়ে ৫০টিরও বেশি ডেটাসেট।
জিওভিজ্যুয়াল সার্চ: এই সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে, নির্দিষ্ট ভৌগলিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে একই রকমের দৃশ্য অনুসন্ধান করতে পারেন ইউজাররা। ডেকার্টস ল্যাবসের এই প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে ল্যান্ডস্যাট, ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল ইমেজারি প্রজেক্ট (এনএআইপি) এবং প্ল্যানেটস্কোপ থেকে স্যাটেলাইট ছবি নিয়ে। এটি কিভাবে ব্যবহার করবেন তার বর্ণনা দেখুন।
ইএসএ আর্থ অনলাইন: ইওলি (পৃথিবী পর্যবেক্ষণ লিঙ্ক) এমন সাইট, যেখানে তাপমাত্রা, কৃষি এবং হিমবাহের মতো বিষয়ে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির যাবতীয় আর্থ অবজারভেশন ডেটা একসাথে পাবেন।
ওপেন ইমেজারি নেটওয়ার্ক (ওআইএন) ওআইএনের কন্ট্রিবিউটররা ছবি এবং তার মেটাডেটা একটি সাধারণ লাইসেন্সের অধীনে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেন। ওপেন ইমেজারি নেটওয়ার্কের কাজ হল – স্যাটেলাইট এবং এরিয়াল ছবি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে – ত্রাণ কর্মসূচি, ক্লাউড হোস্টিং কোম্পানি, ড্রোন এবং বেলুন ম্যাপিংয়ে আগ্রহী, সরকার, এনজিও, ম্যাপিং কোম্পানি এবং এরিয়াল ছবি তৈরি, হোস্টিং ও ব্যবহার করে এমন যে কাউকে সংযুক্ত করা। আর ওপেন এরিয়াল ম্যাপ তাদের তৈরি এই ছবির ভান্ডারে অনুসন্ধান ও প্রবেশের সুযোগ করে দেয় সবাইকে।
আর্থ টাইম: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কার্নেগী মেলন ইউনিভার্সিটির ক্রিয়েট ল্যাব (কমিউনিটি রোবোটিক্স, এডুকেশন এন্ড টেকনোলজি এমপাওয়ারমেন্ট ল্যাব) এটি তৈরি করেছে। “সময়ের ব্যাপ্তিতে পৃথিবী রুপান্তরের যে ভিজ্যুয়ালাইজেশন, তার সাথে ইউজারদের মিথষ্ক্রিয়া (ইন্টার্যাক্ট) করার সুযোগ দেয় আর্থ টাইম। তৈরি করা যায় অ্যানিমেশনও।”