দৈনিক আজকের বাংলা ডেস্ক।।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্র এলাকায় সামসু (৪২) নামের এক বাবুর্চিকে প্রকাশ্যে দিবালোকে এলোপাথারি ভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্র এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটে এ হত্যা কান্ডের ঘটনা। নিহত সামসু চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্র এলাকার ৬নং বøক এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে।
নিহত সামসুর মা মনিবেগম জানান, তার ছেলে সামসু পেশায় একজন বাবুর্চি। অবসর সময়ে জয়নাল আবেদিনের সঙ্গে মাঝে মাঝে চা পানি আনা নেয়ার কাজ করতো। গত কয়েক দিন ধরেই জয়নাল আবেদীনসহ তাদের লোক জনের সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী শাহিন ওরফে সিটিশাহিন, রাজাসহ তাদের লোক জনের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা চলে আসছিলো। বৃহস্পতিবার সকালে শাহিন ওরফে সিটি শাহিনসহ তাদের লোক জন বাবুর্চি সামসুকে চনপাড়া পুর্ণবাসন কেন্দ্রের ৭নং বøকের ইউনুছের গ্রেরেজের পশ্চিম পার্শে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে শাহিন ওরফে সিটিশাহিন, রাজা, শফিকুল, রবিন, কবির, টাক দুলাল, আলমগীর, শাহআলম, ইউসুফ, ডনআরিফ, শাকিল, ডাকাত মোস্তফা, পারভেজ, সুমন, ইমরান, জয়সহ আরো লোকজন মিলে চাকু, ছুড়ি, রামদা, চাপাতিসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রকাশে দিবালোকে কুপাতে থাকে। এক পর্যায়ে সামসু মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও সন্ত্রারীরা ক্ষান্ত না হয়ে পুরো শরীর রক্তাক্ত জখম করে বীর দরর্পে চলে যায়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের মা মনিবেগম আরো জানান, এই সন্ত্রাসীরাই ২০১৭ সালের ১৯ নভেম্বর ইউপি সদস্য বিউটি আক্তার কুট্রির স্বামী হাসান মুহুরিকে হত্যা করে এবং ২০১৯ সালের ৮ জুন সকালে প্রকাশ্যে দিবালোকে এলোপাথারি ভাবে কুপিয়ে হত্যা কওে বিউটি আক্তার কুট্রিকেও। মামনি বেগম প্রশাসনের কাছে ছেলে হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন। এদিকে, হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্র এলাকায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। পুরো এলাকায় সাধারন মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যে কোন সময় আবারও সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাবাসী। পুলিশ চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্র এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। হত্যার ঘটনার সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ নুসরাত জাহান, নারায়ণগঞ্জ সহকারী পুলিশসুপার (গ-সার্কেল) আবির হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভুমি) আতিকুল ইসলাম ও রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।
এলাকাবাসী জানায়, কোথা থেকে আসছে এতো অস্ত্র। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতি নিয়তই চলছে সহিংসতা। যা দীর্ঘ
দিন ধরে চলে আসছে। উল্লেখ্য, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত এক সপ্তাহ ধরে জয়নাল আবেদিন গ্রæপের সঙ্গে শাহিন ওরফে সিটি শাহিনগ্রæপের ৪ দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আস ছিলো। সংঘর্ষে ৭ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত শতাধীক আহত হয়েছেন। বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। রিভলবারসহ ধারালো অস্ত্র উদ্ধারও করেছে পুলিশ। এসব ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আলাদা ভাবে দুটিমামলা দায়ের করেছেন। এই সন্ত্রাসীরাই ২০১৭ সালের ১৯ নভেম্বর ইউপি সদস্য বিউটি আক্তার কুট্রির স্বামী হাসান মুহুরিকে হত্যা করা হয়েছিল এবং ২০১৯ সালের ৮ জুন সকালে প্রকাশ্যে দিবালোকে এলোপাথারি ভাবে কুপিয়ে ইউপি সদস্য বিউটি আক্তার কুট্রিকে হত্যা করা হয়েছে। এ মুহুর্তে কঠোর ভাবে অস্ত্র উদ্ধার প্রয়োজন মনে করছেনে এলাকাসী।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ বলেন, হত্যা কান্ডের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮