আমিরুল হক, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি ।।
উত্তরের জেলা নীলফামারীর সৈয়দপুরে শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। শীতবস্ত্রের অভাবে মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে দুর্ভোগ। মধ্যবৃত্ত ও নি¤œ বৃত্তরা পুরাতন কাপড়ের দোকানে ভীড় জমিয়েছে। শীতের উষ্ণতা থেকে রক্ষা পেতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেল লাইনের পাড়ে জমে উঠেছে পুরাতন কাপড়ের দোকান। ফলে অসর্তকতায যেতে জীবন। অভিযোগ আছে, একটি মহলের সহযোগিতায় এভাবে রেললাইনের ওপর বসে পুরাতন কাপড়ের বাজার। এ জন্য ব্যবসায়ীদের দৈনিক ভিত্তিতে দিতে হয় বাড়তি টাকা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাণিজ্যে সমৃদ্ধ শহর সৈয়দপুরে রাস্তা-ঘাট, বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর, আধুনিক রেলস্টেশন, দেশের বৃহত্তর রেলকারখানাকে আধুনিকায়ন করাসহ বেশ অনেক খাতে উন্নয়ন ঘটেছে। এখানে সৈয়দপুর প্লাজা ও চৌধুরী টাওয়ার নামে দু’টি বহুতল মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। এ মার্কেটগুলোতে পরিকল্পিতভাবে দোকান গড়ে উঠেনি। ফলে জমছেনা ব্যবসা। এছাড়া স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীরা অধিক ভাড়ায় দোকান নিতে পারছেন না। ফলে বেঁচে থাকার জন্য ঝুঁকি নিয়েই তারা রেললাইন ঘেঁষে গড়ে তোলা দোকানে ব্যবসা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এসব দোকান একাধিকবার ভেঙে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় রেল কর্তৃপক্ষ। কিছু দোকান ভেঙেও দেওয়া হয়। কিন্তু স্বল্প সময়ের মধ্যে তা আবারও গড়ে ওঠে।
শহরের ১ ও ২ নম্বর রেলক্রসিংয়ে বসে এসব দোকান। শীত আসলে গোটা রেললাইনই দখল হয়ে যায়। প্রায় হাফ কিঃমি পর্যন্ত রেললাইনের কোন চিহৃই চোখে পড়ে না। ট্রেনের হুইসেল শুনে তাড়াহুড়া করে ব্যবসায়ীরা তাদের পসরা নিয়ে সরে পড়েন, ট্রেন চলে গেলে আবার তারা রেললাইনের ওপর চলে আসেন। একইভাবে সরে যান ক্রেতারাও। এ ছাড়া রেললাইনের দু'পাশ দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে দোকানপাটসহ পাকা স্থাপনা। এ পথে প্রতিদিন আন্তঃনগরসহ ১০টি ট্রেন চলাচল করে এবং মাঝেমধ্যে ঘটে দুর্ঘটনা।
শহরের বাশঁবাড়ী এলাকা থেকে শীত বস্ত্র কিনতে আসা কামরুল হাসান বলেন, শীত শুরু হয়েছে। করোনাভাইরাস এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। তাই শরীরে ঠান্ডা লাগানো যাবে না। শীতের শুরুতেই গরম কাপড় কিনতে আসছি। ৫শ’ টাকায় ৩টি শীতের কাপড় কিনেছি।
রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী জানান, গরীব মানুষ, তাই পেটের দায়ে ঝঁকি নিয়ে রেললাইনে ওপর ব্যবসা করছি। ঠেঙ্গামারা এনজিও থেকে ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে শীতের কাপড় বিক্রি করছেন। তার মতো অধিকাংশ ব্যবসায়ী এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছেন। তিনি বলেন, আমাদের তো আর ব্যাংক ঋণ দেবে না, তাই এনজিও থেকে বেশি সুদে টাকা নিয়েছি। শীত বেশিদিন থাকলে ব্যবসা ভালো হবে, ঋণের টাকা পরিশোধ করে খেয়ে-দেয়ে ২০/২৫ হাজার টাকা আয় করতে পারব।
এ অঞ্চলের রেললাইনের উভয় পাশের ভূ-সম্পদ বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তা সুলতান মৃধা বলেন, রেললাইনের ওপর গরম কাপড়ের দোকানপাট ও লাইন ঘেঁষে গড়ে ওঠা অবকাঠামোর জন্য ট্রেন চলাচলে ঝুঁকি থাকে। বারবার ওই সব দোকান উচ্ছেদের করা হয়। কিন্তু আবারও একই অবস্থা হয়। তবে আবারও অবৈধ দোকানসহ স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮