নিকেশ বৈদ্য।।
জগন্নাথপুরে ৭ ইউনিয়ন নির্বাচনে যে কারণে সহজ বিজয় ও ভরাডুবি।।
সুনামগঞ্জ জেলার প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুর উপজেলার ৭ ইউনিয়নে চতুর্থ ধাপের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গত ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচনে যে কারণে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সহজ বিজয় ও ভরাডুবি হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় ভোটাররা জানান, ব্যক্তি ইমেজ, দলীয় পরিচয় ও কূট-কৌশলে যারা এগিয়ে ছিলেন, তারাই নির্বাচিত হয়েছেন। আর যাদের ত্রæটি হয়েছে, তাদেরই ভরাডুবি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে জনমতকে যারা গুরুত্ব ও প্রধান্য দিয়েছেন, তারা সহজে বৈতরণি পার হতে পেরেছেন। যারা অবহেলা বা অহঙ্কার করেছেন, তাদের তরী ডুবেছে। নির্বাচনী ভোটযুদ্ধে যারা যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বস্ত যোদ্ধাদের নিয়ে রণ-কৌশলে মাঠ সাজিয়ে জনমতকে আয়ত্বে এনেছিলেন, তারাই বিজয়ী হয়েছেন। যারা পিছিয়ে ছিলেন বা ভূল করেছেন, তারাই পরাজয় বরণ করেছেন। এবারের নির্বাচনে অনেক ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। স্থাপন করেছে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত।
এর মধ্যে ১নং কলকলিয়া ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত রফিক মিয়া বিজয়ী হলেও তার সাথে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আলাল হোসেন রানা হাড্ডাহাডি লড়াই করে অবশেষে মাত্র ৫৩৬ ভোটে পরাজিত হয়েছেন। এখানে আরেক বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আবদুস সোবহানও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছেন। এতে নৌকার সহজ বিজয় হওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে বলে অনেকে জানান।
২নং পাটলি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আংগুর মিয়া ৮৭১ ভোটে আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল হককে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এ ইউনিয়নে ব্যক্তি ইমেজ ও দলীয় পরিচয় প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। যে কারণে নৌকার সহজ বিজয় হয়েছে। এমন অভিমত স্থানীয় জনতার।
৫নং চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুল ১৭৬৮ ভোটের বিশাল ব্যবধানে বর্তমান চেয়ারম্যান আরশ মিয়াকে হারিয়ে বিজয়ী হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। যা আগামী কোন নির্বাচনের ক্ষেত্রে মাইলফলক ও দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যার না আছে টাকা। না আছে শক্তি। কোন প্রকার স্বার্থ ছাড়াই মানুষ শুধু ভালবেসে ভোট দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, এখানে নৌকারও পরাজয় হয়েছে। এভাবেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন স্থানীয়দের মধ্যে অনেকে।
৬নং রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ ছদরুল ইসলাম ২৮১৯ ভোটের বিশাল ব্যবধানে বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম রানাকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এখানেও ব্যক্তি ইমেজ ও দলীয় পরিচয় প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। যে কারণে নৌকার সহজ বিজয় হয়েছে।
৭নং সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হাসান স্বতন্ত্র প্রার্থী মুকিতুর রহমানকে ৯৬২ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এখানেও ব্যক্তি ইমেজ ও দলীয় পরিচয় প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। যে কারণে নৌকার সহজ বিজয় হয়েছে।
৮নং আশারকান্দি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ূব খান ১৪৩২ ভোটের বিশাল ব্যবধানে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুস ছত্তারকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এখানে ব্যক্তি ইমেজ ও মানুষের ভালবাসা প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। যে কারণে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে।
৯নং পাইলগাঁও ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মখলুছ মিয়া মাত্র ৩৫১ ভোটের ব্যবধানে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুক আহমদকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এখানেও নৌকার ভরাডুবি হয়েছে।
জগন্নাথপুরে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে যারা হারালেন জামানত।।
সুনামগঞ্জ জেলার প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুর উপজেলার ৭ ইউনিয়নে চতুর্থ ধাপের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গত ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১৪ জন প্রার্থী তাদের জামানত হারিয়েছেন। জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান, যে কোন ইউনিয়নে মোট প্রাপ্ত ভোটের ৮ ভাগের মধ্যে ১ ভাগের কম ভোট পেলে প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। সেই হিসাব অনুযায়ী যারা জামানত হারিয়েছেন, তারা হলেন ২নং পাটলি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এনামুল ইসলাম ও আতিকুর রহমান আতিক। ৫নং চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইলাছ মিয়া ও মুজিবুর রহমান। ৬নং রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম আসিক, মজলুল হক ও ছালিক মিয়া। ৭নং সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মকসুদ মিয়া, আজহারুল ইসলাম কামালী ও সৈয়দ আসাদ হোসেন চৌধুরী। ৮নং আশারকান্দি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ আলী, আহমদ হোসাইন, গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী পারভেজ ও জাতীয় পার্টি মনোনীত শাহ তারেক রহমান নিপু।
জগন্নাথপুরে ৭ ইউনিয়নে মেম্বার পদে নির্বাচিত হলেন যারা।।
সুনামগঞ্জ জেলার প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুর উপজেলার ৭ ইউনিয়নে চতুর্থ ধাপের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গত ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচনে ৭ ইউনিয়নে মেম্বার পদে মোট ৮৪ জন নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচিতরা হলেন, কলকলিয়া ইউনিয়নে সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডে হুছনারা বেগম রিছনারা, ২নং ওয়ার্ডে ছফেদা খানম চৌধুরী ও ৩নং ওয়ার্ডে স্বপ্না রাণী দাস। সাধারণ ১নং ওয়ার্ডে কামরুজ্জামান, ২নং ওয়ার্ডে মাহবুবুল হাসান মোহন, ৩নং ওয়ার্ডে আজিজুল হক, ৪নং ওয়ার্ডে আবদুল কাইয়ূম, ৫নং ওয়ার্ডে মসিক আহমদ, ৬নং ওয়ার্ডে আবদুল হাসিম, ৭নং ওয়ার্ডে জসিম উদ্দিন, ৮নং ওয়ার্ডে ছালিক মিয়া ও ৯নং ওয়ার্ডে সাদিক আলম।
পাটলি ইউনিয়নের সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডে ছামিরুন নেছা, ২নং ওয়ার্ডে রুজিনা বেগম ও ৩নং ওয়ার্ডে আমিরুন্নেছা। সাধারণ ১নং ওয়ার্ডে শাহাব উদ্দিন, ২নং ওয়ার্ডে আবদুল মোমিন, ৩নং ওয়ার্ডে আবু ছালেক, ৪নং ওয়ার্ডে নজরুল ইসলাম, ৫নং ওয়ার্ডে আবদুল মালেক, ৬নং ওয়ার্ডে আবদুল মুবিন, ৭নং ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত খালিদ হাসান খালেদ, ৮নং ওয়ার্ডে মুহিত মিয়া ও ৯নং ওয়ার্ডে জাহির আলী।
চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের ১নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে শেলি বেগম, ২নং ওয়ার্ডে ছালমা বেগম ও ৩নং ওয়ার্ডে মনতারা বিবি। সাধারণ ১নং ওয়ার্ডে অনিল চন্দ্র দাস, ২নং ওয়ার্ডে হিরা মিয়া, ৩নং ওয়ার্ডে লিলু মিয়া, ৪নং ওয়ার্ডে সুজাত মিয়া, ৫নং ওয়ার্ডে রুবেল মিয়া, ৬নং ওয়ার্ডে নুরুল হোসেন, ৭নং ওয়ার্ডে ছালেহ উদ্দিন, ৮নং ওয়ার্ডে মহি উদ্দিন ও ৯নং ওয়ার্ডে মফিজুর রহমান চৌধুরী।
রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডে সুহেনা বেগম, ২নং ওয়ার্ডে ইয়ারুন নেছা ও ৩নং ওয়ার্ডে কিবরিয়া বেগম। সাধারণ ১নং ওয়ার্ডে কওছর মিয়া, ২নং ওয়ার্ডে টিপু সুলতান, ৩নং ওয়ার্ডে জাকির হোসেন, ৪নং ওয়ার্ডে তেরা মিয়া, ৫নং ওয়ার্ডে কাওছার মিয়া তালুকদার, ৬নং ওয়ার্ডে আলাই মিয়া, ৭নং ওয়ার্ডে মিলাদ মিয়া, ৮নং ওয়ার্ডে নুরুল হক ও ৯নং ওয়ার্ডে আবদুল জলিল।
সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নের সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডে জয়গুন নেছা, ২নং ওয়ার্ডে শিউলি আক্তার ও ৩নং ওয়ার্ডে সাফিয়া বেগম। সাধারণ ১নং ওয়ার্ডে লাকু মিয়া, ২নং ওয়ার্ডে সৈয়দ এমদাদ মিয়া, ৩নং ওয়ার্ডে সৈয়দ আলাউর রহমান, ৪নং ওয়ার্ডে সৈয়দ শাহ তানভীর আলম, ৫নং ওয়ার্ডে আকিক মিয়া, ৬নং ওয়ার্ডে সুহেল আহমদ, ৭নং ওয়ার্ডে শামসুদ্দিন কামালী, ৮নং ওয়ার্ডে হাফিজুল ইসলাম ও ৯নং ওয়ার্ডে খুরশেদ আলম।
আশারকান্দি ইউনিয়নের সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডে লছনু খানম, ২নং ওয়ার্ডে আফিয়া খানম ও ৩নং ওয়ার্ডে সাজনা বেগম। সাধারণ ১নং ওয়ার্ডে সৈয়দ এনামুল হোসেন, ২নং ওয়ার্ডে আলা উদ্দিন, ৩নং ওয়ার্ডে শেখ আবদুল ওয়াহিদ, ৪নং ওয়ার্ডে ফজলু মিয়া, ৫নং ওয়ার্ডে জমির উদ্দিন, ৬নং ওয়ার্ডে শওকত আলী, ৭নং ওয়ার্ডে আলী হায়দার, ৮নং ওয়ার্ডে ফয়জুন্নুর ও ৯নং ওয়ার্ডে শাহজাহান খান।
পাইলগাঁও ইউনিয়নের সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডে আম্বিয়া বেগম, ২নং ওয়ার্ডে সুফিয়া বেগম ও ৩নং ওয়ার্ডে শাহানা বেগম। সাধারণ ১নং ওয়ার্ডে শাহান আহমদ, ২নং ওয়ার্ডে আলিম উদ্দিন, ৩নং ওয়ার্ডে আবু বকর মধু, ৪নং ওয়ার্ডে মজুমদার আলী, ৫নং ওয়ার্ডে ফজল মিয়া, ৬নং ওয়ার্ডে আলী আকবর খান, ৭নং ওয়ার্ডে আবুল হোসেন, ৮নং ওয়ার্ডে নজমুদ্দিন ও ৯নং ওয়ার্ডে আবদুল কাহির।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮