![](https://dainikajkerbangla.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
মো. ইমরান হোসেন ,
কালিয়াকৈর (গাজীপুর ) প্রতিনিধি ।।
গাজীপুরের শ্রীপুরের কেওয়া পূর্বখণ্ড গ্রামে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন পাওলা রোস সিনডেলার টিউলিপ ফুলের বাগান পরিদর্শন করেছেন। শুক্রবার টিউলিপের বাগান পরিদর্শন শেষে পাওলা রোস সিনডেলার বলেন, তিনি এ দেশে ফুলটি দেখে মুগ্ধ। মোবাইলে ফুলের ছবি তুলেছেন। এই টিউলিপের বাগানে এসে তাঁর মনে হয়েছে নেদারল্যান্ডসের কোনো এলাকা।
মুগ্ধ হওয়ার মতো সৌন্দর্যের ফুল টিউলিপ। সাধারণত পৃথিবীর শীতল দেশগুলোতে এ ফুল বেশি চাষ হয়। আমাদের দেশে এই ফুলের বেশ চাহিদা থাকায় এখন তা বিদেশ থেকে আনা হচ্ছে। নেদারল্যান্ডস আর কাশ্মীরে ব্যাপকভাবে চাষ হওয়া সেই টিউলিপ ফুল শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুরে বাণিজ্যিকভাবে ফুটিয়েছেন একজন সফল ফুলচাষি। এই ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ ও ভীষণ আগ্রহী হচ্ছেন এলাকাবাসী। এসংবাদ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন ফুলপ্রেমি মানুষ। শুধু তাই নয়, ফুলের জগতে অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে এই টিউলিপ ফুল। লিলি, জারবেরা, চায়না গোলাপসহ নানা ধরনের ফুলের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্যিকভিত্তিক এই টিউলিপ ফুল চাষে দেলোয়ার হোসেন যে স্বপ্ন দেখালেন, তা অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বলে মনে করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ।
টিউলিপের বাগানের উদ্যোক্তা দম্পতিকে সিনডেলার জানিয়েছেন, তাঁর দেশ থেকে টিউলিপ বাল্ব আমদানির ক্ষেত্রে তিনি সহযোগিতা করবেন। আমদানির প্রক্রিয়া যতটা সম্ভব সহজ করার জন্য তাঁর সহযোগিতা থাকবে। নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ৫০ বছরের। এ দেশের মাটিতে টিউলিপের চাষ নেদারল্যান্ডস-বাংলাদেশ আন্তসম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে পারে। টিউলিপ ফুল চাষের উদ্যোক্তাদের ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে চাষাবাদ করার জন্য তাঁর দেশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সুবিধা দেওয়া হবে।
শ্রীপুরে ২২ হাজার টিউলিপ ফুলের চারা নিয়ে বাগান করেছেন দেলোয়ার হোসেন-সেলিনা হোসেন উদ্যোক্তা দম্পতি। এটি তাঁদের তৃতীয়বারের মতো টিউলিপের চাষ প্রকল্প। এর আগে ২০২০ সালে তাঁরা প্রথমবারের মতো টিউলিপের চাষে সফলতা দেখিয়েছিলেন। ১২ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের ফুল উৎপাদন করে সেগুলো পাইকারি বিক্রি করছেন এই দম্পতি। ফুলের বীজ কিনতে নেদারল্যান্ডসে গিয়ে দেলোয়ার হোসেন টিউলিপের ফুল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন এবং এই ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ হন। কৃষিতে সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ দেলোয়ার হোসেন ২০১৭ সালে অর্জন করেছেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার।
উদ্যোক্তা সেলিনা হোসেন বলেন, বাংলাদেশে টিউলিপ চাষ একদমই নতুন। গত দুই মৌসুমে তাঁদের টিউলিপ ফুল পরিদর্শনে এসেছিলেন বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, সাংসদ ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা। তাঁরা সবাই এই ফুল দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। এ বছর ফুল দেখতে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী ভিড় করেছেন।
উদ্যোক্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, টিউলিপ ফুল দেশজুড়ে সম্প্রসারণের জন্য তাঁরা কাজ করছেন। এ বছর ৭০ হাজার টিউলিপ বাল্ব আমদানি করেছেন তাঁরা। এর মধ্যে ২২ হাজার বাল্ব নিজেরা জমিতে বুনেছেন। বাকি বাল্বগুলোর কিছু পাঠানো হয়েছে তেঁতুলিয়ার কয়েকটি বাগানে। আর কিছু গেছে রাজশাহীর গদখালীতে। এসব প্রকল্প দেখভালের দায়িত্বও তাঁর ওপর। তিনি মনে করেন, একসময় ফুলটি দেশের অর্থনীতিতে ভালো ভূমিকা রাখবে। সে জন্য প্রয়োজন সরকারি সহযোগিতা।