Dhaka , Saturday, 6 July 2024
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
সিলেট ও শ্রীমঙ্গলে ঝড় ও বজ্রাপাতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।। মানুষকে ভালোবাসেন বলেই তাদের টানে আমেরিকা ছেড়ে দেশের এসে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন- দেলোয়ার মোমেন।। শরীয়তপুরে পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা কালে জনতার হাতে যুবক আটক।। রামগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ আরাফাতের  নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তা সংস্কার।। রূপগঞ্জে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণ।। তিতাসের জিয়ারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাখাওয়াত হোসেনের শিক্ষকতার দুই যুগপূর্তি।। কোম্পানীগঞ্জে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার- স্বামী পলাতক।। নরসিংদী বৃষ্টির কারনে পশুর হাটে বেচা কেনা কম।। মায়ের সামনে পাঁচতলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু।। ঈদুল আযহা উপলক্ষে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে টানা ৮ দিন আমদানি রপ্তানি বন্ধ।। শেখ কামাল আইটি ট্রেনিংয়ে সারাদেশের মধ্যে প্রথম হয়েছে রাজাপুরের মশিউর রহমান তামিম।। সুন্দরগঞ্জের দহবন্দ ইউনিয়নে ভিজিএফ চাল বিতরণ।। কুমিল্লা পিটিআই কর্তৃক সততা নৈতিকতা ও শুদ্ধাচার পুরস্কার পেলেন- তানজুরুন নাহার।। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সদরপুরে বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর শুভ সূচনা।। সড়কতো নয় যেন ধান শুকানোর চাতাল।। তিতাসে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ভিজিএফের চাল বিতরণ অনুষ্ঠিত।। ঈদ উপলক্ষে হিলিতে বিনামূল্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে চাল বিতারণ।।  পাবনায় হত্যায় মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।। আই-ইইই ইবি স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চের সভাপতি পিয়াস সম্পাদক ইকবাল।। পাবনা জেলা স্কুল জাতীয় পর্যায়ে কুইজ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয়।। সিলেটে বৃস্পতিবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিপাত-ফের জলাবদ্ধতার শঙ্কা।। জনপ্রিয়তা ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রফিক আমার নামে মিথ্যাচার চালাচ্ছে- আবুল বাশার  বাদশা।। নিখোঁজের দুদিন পর মাদরাসা ছাত্রের মরদেহ মিলল ঘাটলার নিচে।। ঝালকাঠিতে হত্যা মামলায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন।। সুন্দরগঞ্জে পশুর হাট নিয়ে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে ৩ রাউন্ড গুলি বিনিময়- পুলিশসহ আহত ১০।। নোয়াখালীতে পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু।। পাবনায় শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নছিমন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ২ জন নিহত আহত -৭ জন।। রূপগঞ্জ কাঞ্চন পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী রফিক সমর্থকদের উপর হামলা।। ৩৬ দিন পর যুবকের লাশ উত্তোলন- ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের।। শিবচরে আগুনে ১৩ গরু মারা গেছে।।

২২৭ বছরের সূর্যমণি মেলা

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 06:53:49 pm, Friday, 25 March 2022
  • 396 বার পড়া হয়েছে

ইতিহাস ও ঐতিহ্যপ্রেমীদের অভিজ্ঞতার হাতছানি-গ্রামীণ সংস্কৃতির ধারক

মনির হোসেন,বরিশাল ব্যুরো।।

ইতিহাস ও ঐতিহ্যপ্রেমীদের
অভিজ্ঞতার হাতছানি-গ্রামীণ
সংস্কৃতির ধারক

ইতিহাস ও ঐতিহ্যপ্রেমীদের অভিজ্ঞতার জন্য সূর্যমণির মেলা এক দারুণ অভিজ্ঞতার হাতছানি। গ্রামীণ সংস্কৃতি লালন করে আসা এই মেলার সাথে যারা পরিচিত নন, তাদের জন্য ঘুরে আসি আজ থেকে ২২৭ বছর পূর্বের সূর্যমণির মাঠে। যে মাঠে গত ২৩দিন ধরে চলমান রয়েছে সূর্যমনির মেলা। যা চলবে আরও সাতদিন। গত দুইবছর করোনার কারণে মেলার আয়োজন বন্ধ ছিলো। এবার মেলার শেষ সময়ে বেশ জমে উঠেছে।
কয়েকশ’ স্টল সমৃদ্ধ এ মেলার মূল আকর্ষণের একটি হচ্ছে স্বল্পমূল্যের কাঠের আসবাব ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। রয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন সার্কাস। ঐতিহ্যবাহী পুতুল নাচ, যাত্রাপালা, ভ‚তের বাড়ি ও দৈনিক উল্লাস র‌্যাফেল ড্র লটারী। গ্রাম্যমেলার মূল বৈশিষ্ট্য কাঠের নাগরদোলার পাশাপাশি রয়েছে নতুন সংযুক্ত নৌকা আকৃতির স্টিলের নাগরদোলা। মেলায় খুব ভালো মানের নানাধরনের খাবার পাওয়া যায়। মেলায় ওঠা বিশাল আকৃতির মিষ্টির কদর রয়েছে আগতদের মধ্যে, যা ঐতিহ্যবাহীও বটে। মাসব্যাপী সূর্যমনির মেলা বানারীপাড়াসহ পাশ্ববর্তী জেলা ও উপজেলার বিনোদন প্রেমি মানুষের কাছে এখন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে।

সূর্যমণি মেলার ইতিহাস :

বরিশাল জেলার বর্তমান বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের বেতাল গ্রামের বর্তমান সূর্যমণির মাঠে ২২৭ বছর পূর্বেও চলতো চাষাবাদ। সেই সময়ের কোনো একদিনে জমিতে লাঙল চালাচ্ছিলেন এক কৃষক। হঠাৎ কিসে যেন লাঙলের ফলা আটকে যায়। কিছুতেই আর হালের গরু সামনে এগুতে পারছিলো না। তাই নিরুপায় কৃষক কোদাল দিয়ে কিছু মাটি সরিয়ে দেখতে পেলেন, কালো মতন শক্ত কিছু। তিনি দৌঁড়ে স্থানীয় প্রভাবশালী সরকার বাড়ির কর্তাকে বিষয়টি জানালেন। ছুটে এলো লোকজন। মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেল কালো বর্ণের কষ্টিপাথরের সূর্যমূর্তি। লাঙলের ফলায় আটকে যার কানের এক অংশবিশেষ ভেঙে যায়।
যতœসহকারে মূর্তিটির ঠাঁই হলো সরকার বাড়িতে। কিন্তু বাড়ির গৃহকত্রী স্বপ্নে পেলেন এক আদেশ। জমির যেস্থানে যেদিনে মূর্তিটি পাওয়া গেছে, সেখানে সেইদিনে করতে হবে সূর্য ঠাকুরের পূজা। আর দিনটি ছিল মাঘী সপ্তমীর শুক্লপক্ষ। ১৭৯৫ সালে এ পূজাকে ঘিরে প্রথম মেলার আয়োজন করা হয়।
এ কাহিনীর নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া না গেলেও জ্ঞানী-গুণী, ইতিহাসবিদ ও স্থানীয়দের মাঝে কথিত এবং প্রচলিত ইতিহাস এটাই। মূলত সূর্যমূর্তির পূজাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে সূর্যমনি মেলার প্রচলন। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বিশ্বাস করেন, এ পূজা করলে সূর্যের তাপ, রাহু, রোগবালাই থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং বৃদ্ধি পাবে জমির উর্বরা শক্তি। শুরুতে মেলা একদিনই হতো। ১৯৭০ সালের দিকে মেলা তিন দিনব্যাপী করা হতো। আর এখন ধীরে ধীরে মেলার ব্যাপ্তি বেড়ে ৩০ দিনে দাঁড়িয়েছে।
সরকার বাড়ির শেষ বংশধর গঙ্গু সরকার ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় তার বাড়িঘর-জমিজমা স্থানীয় চেরাগ আলী মোল্লার কাছে বিক্রি করে যান। সেই থেকে মোল্লা পরিবার এই সূর্যমণির মাঠের মালিক। বর্তমান বংশধর জাকির হোসেন মোল্লাসহ এ মেলার আয়োজনে রয়েছে মেলা আয়োজক কমিটি ও পূজা কমিটি।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাটির নিচে পাওয়া প্রায় পাঁচ ফুট লম্বা, চোখে রেডিয়াম লাগানো কষ্টিপাথরের ঐতিহাসিক সূর্যমূর্তিটি ১৯৬৮ সালে চুরি হয়ে যায়। তবে তাতে থেমে যায়নি পূজা ও মেলার প্রচলন। মাটির তৈরি সূর্যমূর্তি দিয়ে প্রতিবছর পালিত হয় এ মেলা। গ্রাম্য মেলা, নাগরদোলা, বাতাসা, মনখুশি, আর নাড়– শব্দগুলো অনেকটাই যখন রূপকথা আর ইতিহাস হয়ে উঠছে প্রযুক্তির দ্রæত ধাবমান যাত্রায়, ঠিক তখন শত শত বছর ধরে পালিত হয়ে আসা লোককাহিনী সমৃদ্ধ সূর্যমনির মেলা ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রেখেছে সভ্যতার সাথে পাল্লা দিয়ে।
১১ মাস চাষাবাদ আর এক মাসব্যাপী এ মেলার মাঠে রয়েছে শ্রী শ্রী সূর্যদেবের মন্দির। যেখানে রাখা মাটির সূর্যমূর্তির পূজা হয় এক মাসব্যাপী প্রতিদিন সকালে। বংশানুক্রমে পূজার দায়িত্বে থাকা পুরোহিতদের বর্তমান বংশধর কৃষ্ণকান্ত ভট্টাচার্য। মন্দিরে গিয়ে শুধু ২০ টাকা দিয়ে যেকেউ ক্রয় করতে পারবেন আব্দুল হাই বখশের লেখা ‘বানারীপাড়ার সূর্যমণি মেলার ইতিহাস’ শীর্ষক এক পুস্তিকা।

যেভাবে যাবেন :  

বরিশাল নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে বাসে ৫০ মিনিট এবং থ্রী-হুইলার মাহিন্দ্রতে ৪০মিনিটে পৌঁছে যাওয়া যায় বানারীপাড়া উপজেলার বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে একটি রিকশায় ২০ টাকার ভাড়ায় পৌঁছে যাবেন কাঙ্খিত সূর্যমণির মেলায়। মেলা ঘুরে দেখার জন্য উপযুক্ত সময় বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত। মেলায় আসা বা ফেরার পথে আপনি চাইলে আপনার পরিকল্পনায় রাখতে পারেন নয়নাভিরাম গুঠিয়া মসজিদ ও দুর্গাসাগর ঘুরে নেওয়ার প্রস্তুতি। কারণ পথেই আপনি অতিসহজে পাচ্ছেন বরিশালের বিখ্যাত এ দুটি পর্যটন কেন্দ্র।

ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

সিলেট ও শ্রীমঙ্গলে ঝড় ও বজ্রাপাতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।।

২২৭ বছরের সূর্যমণি মেলা

আপডেট সময় : 06:53:49 pm, Friday, 25 March 2022

মনির হোসেন,বরিশাল ব্যুরো।।

ইতিহাস ও ঐতিহ্যপ্রেমীদের
অভিজ্ঞতার হাতছানি-গ্রামীণ
সংস্কৃতির ধারক

ইতিহাস ও ঐতিহ্যপ্রেমীদের অভিজ্ঞতার জন্য সূর্যমণির মেলা এক দারুণ অভিজ্ঞতার হাতছানি। গ্রামীণ সংস্কৃতি লালন করে আসা এই মেলার সাথে যারা পরিচিত নন, তাদের জন্য ঘুরে আসি আজ থেকে ২২৭ বছর পূর্বের সূর্যমণির মাঠে। যে মাঠে গত ২৩দিন ধরে চলমান রয়েছে সূর্যমনির মেলা। যা চলবে আরও সাতদিন। গত দুইবছর করোনার কারণে মেলার আয়োজন বন্ধ ছিলো। এবার মেলার শেষ সময়ে বেশ জমে উঠেছে।
কয়েকশ’ স্টল সমৃদ্ধ এ মেলার মূল আকর্ষণের একটি হচ্ছে স্বল্পমূল্যের কাঠের আসবাব ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। রয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন সার্কাস। ঐতিহ্যবাহী পুতুল নাচ, যাত্রাপালা, ভ‚তের বাড়ি ও দৈনিক উল্লাস র‌্যাফেল ড্র লটারী। গ্রাম্যমেলার মূল বৈশিষ্ট্য কাঠের নাগরদোলার পাশাপাশি রয়েছে নতুন সংযুক্ত নৌকা আকৃতির স্টিলের নাগরদোলা। মেলায় খুব ভালো মানের নানাধরনের খাবার পাওয়া যায়। মেলায় ওঠা বিশাল আকৃতির মিষ্টির কদর রয়েছে আগতদের মধ্যে, যা ঐতিহ্যবাহীও বটে। মাসব্যাপী সূর্যমনির মেলা বানারীপাড়াসহ পাশ্ববর্তী জেলা ও উপজেলার বিনোদন প্রেমি মানুষের কাছে এখন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে।

সূর্যমণি মেলার ইতিহাস :

বরিশাল জেলার বর্তমান বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের বেতাল গ্রামের বর্তমান সূর্যমণির মাঠে ২২৭ বছর পূর্বেও চলতো চাষাবাদ। সেই সময়ের কোনো একদিনে জমিতে লাঙল চালাচ্ছিলেন এক কৃষক। হঠাৎ কিসে যেন লাঙলের ফলা আটকে যায়। কিছুতেই আর হালের গরু সামনে এগুতে পারছিলো না। তাই নিরুপায় কৃষক কোদাল দিয়ে কিছু মাটি সরিয়ে দেখতে পেলেন, কালো মতন শক্ত কিছু। তিনি দৌঁড়ে স্থানীয় প্রভাবশালী সরকার বাড়ির কর্তাকে বিষয়টি জানালেন। ছুটে এলো লোকজন। মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেল কালো বর্ণের কষ্টিপাথরের সূর্যমূর্তি। লাঙলের ফলায় আটকে যার কানের এক অংশবিশেষ ভেঙে যায়।
যতœসহকারে মূর্তিটির ঠাঁই হলো সরকার বাড়িতে। কিন্তু বাড়ির গৃহকত্রী স্বপ্নে পেলেন এক আদেশ। জমির যেস্থানে যেদিনে মূর্তিটি পাওয়া গেছে, সেখানে সেইদিনে করতে হবে সূর্য ঠাকুরের পূজা। আর দিনটি ছিল মাঘী সপ্তমীর শুক্লপক্ষ। ১৭৯৫ সালে এ পূজাকে ঘিরে প্রথম মেলার আয়োজন করা হয়।
এ কাহিনীর নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া না গেলেও জ্ঞানী-গুণী, ইতিহাসবিদ ও স্থানীয়দের মাঝে কথিত এবং প্রচলিত ইতিহাস এটাই। মূলত সূর্যমূর্তির পূজাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে সূর্যমনি মেলার প্রচলন। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বিশ্বাস করেন, এ পূজা করলে সূর্যের তাপ, রাহু, রোগবালাই থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং বৃদ্ধি পাবে জমির উর্বরা শক্তি। শুরুতে মেলা একদিনই হতো। ১৯৭০ সালের দিকে মেলা তিন দিনব্যাপী করা হতো। আর এখন ধীরে ধীরে মেলার ব্যাপ্তি বেড়ে ৩০ দিনে দাঁড়িয়েছে।
সরকার বাড়ির শেষ বংশধর গঙ্গু সরকার ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় তার বাড়িঘর-জমিজমা স্থানীয় চেরাগ আলী মোল্লার কাছে বিক্রি করে যান। সেই থেকে মোল্লা পরিবার এই সূর্যমণির মাঠের মালিক। বর্তমান বংশধর জাকির হোসেন মোল্লাসহ এ মেলার আয়োজনে রয়েছে মেলা আয়োজক কমিটি ও পূজা কমিটি।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাটির নিচে পাওয়া প্রায় পাঁচ ফুট লম্বা, চোখে রেডিয়াম লাগানো কষ্টিপাথরের ঐতিহাসিক সূর্যমূর্তিটি ১৯৬৮ সালে চুরি হয়ে যায়। তবে তাতে থেমে যায়নি পূজা ও মেলার প্রচলন। মাটির তৈরি সূর্যমূর্তি দিয়ে প্রতিবছর পালিত হয় এ মেলা। গ্রাম্য মেলা, নাগরদোলা, বাতাসা, মনখুশি, আর নাড়– শব্দগুলো অনেকটাই যখন রূপকথা আর ইতিহাস হয়ে উঠছে প্রযুক্তির দ্রæত ধাবমান যাত্রায়, ঠিক তখন শত শত বছর ধরে পালিত হয়ে আসা লোককাহিনী সমৃদ্ধ সূর্যমনির মেলা ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রেখেছে সভ্যতার সাথে পাল্লা দিয়ে।
১১ মাস চাষাবাদ আর এক মাসব্যাপী এ মেলার মাঠে রয়েছে শ্রী শ্রী সূর্যদেবের মন্দির। যেখানে রাখা মাটির সূর্যমূর্তির পূজা হয় এক মাসব্যাপী প্রতিদিন সকালে। বংশানুক্রমে পূজার দায়িত্বে থাকা পুরোহিতদের বর্তমান বংশধর কৃষ্ণকান্ত ভট্টাচার্য। মন্দিরে গিয়ে শুধু ২০ টাকা দিয়ে যেকেউ ক্রয় করতে পারবেন আব্দুল হাই বখশের লেখা ‘বানারীপাড়ার সূর্যমণি মেলার ইতিহাস’ শীর্ষক এক পুস্তিকা।

যেভাবে যাবেন :  

বরিশাল নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে বাসে ৫০ মিনিট এবং থ্রী-হুইলার মাহিন্দ্রতে ৪০মিনিটে পৌঁছে যাওয়া যায় বানারীপাড়া উপজেলার বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে একটি রিকশায় ২০ টাকার ভাড়ায় পৌঁছে যাবেন কাঙ্খিত সূর্যমণির মেলায়। মেলা ঘুরে দেখার জন্য উপযুক্ত সময় বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত। মেলায় আসা বা ফেরার পথে আপনি চাইলে আপনার পরিকল্পনায় রাখতে পারেন নয়নাভিরাম গুঠিয়া মসজিদ ও দুর্গাসাগর ঘুরে নেওয়ার প্রস্তুতি। কারণ পথেই আপনি অতিসহজে পাচ্ছেন বরিশালের বিখ্যাত এ দুটি পর্যটন কেন্দ্র।