রাজিব আহমেদ নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি।।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নরসিংদী জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিএম তালেব হোসেন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলী এর যৌথ স্বাক্ষরিত নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে গত ৩১/০১/২০২২ খ্রি. তারিখে নরসিংদী সদর থানা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়াকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করেন।

ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক স্বাক্ষরিত জেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে উল্লেখ করেন তিনি ইউপি নির্বাচনে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থীকে সমর্থন ও বিজয় করার অভিযোগে তাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। গত সোমবার নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে সদর থানা ও নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের ( একাংশের) পৃথক পৃথক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়া’র উপস্থিতিতে ইউনিয়ন ও শহরের বাকি ৫টি ওয়ার্ড সন্মেলন করার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। শহর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দীপক সাহার সঞ্চালনায় নেতাকর্মীদের সর্বসম্মতিক্রমে সন্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হয়।

তারিখ গুলো হচ্ছে :- ১৩ মে শুক্রবার ১নং ওয়ার্ড শাখা, ১৪ মে শনিবার ৮ নং ওয়ার্ড শাখা, ১৫ মে রবিবার ৪, ৫ ও ৯ নং ওয়ার্ড শাখা। এসময় যৌথ সভায় উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীরা একাত্মতা ঘোষনা করে বলেন, সদর থানা আওয়ামী লীগের বৈধ আহবায়ক আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়া ও মাধবদী থানা আওয়ামী লীগেে বৈধ ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আলাউদ্দিন আল আজাদ। এবিষয়ে সদর থানা আহবায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করেছে তা অবৈধ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র বিরোধী ও নিয়মবহির্ভূত। গঠনতন্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী সংগঠনের কোনো সদস্য শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট প্রেরণ করবেন। জেলা/ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো সদস্যদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার ক্ষমতা একমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ রাখে। সংগঠের যেকোন শাখা তাহার যেকোন কর্মকর্তা বা সদস্যকে দলের স্বার্থ, আদর্শ শৃঙ্খলা তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থী কর্মকান্ডের জন্য স্ব-স্ব পদ বা দায়িত্ব হতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে। তবে এ ব্যাপারে ঊধ্বর্তন শাখার অনুমোদন প্রয়োজন হবে এবং এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শাখা সাধারণ সভায় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।

ঊর্ধ্বতন শাখা পরবর্তী একমাসের মধ্যে তাহার সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট শাখাকে জানাবে।অন্যথায় সিদ্ধান্তের সহিত একমত পোষণ করবে। যে কোনো বহিষ্কারের বিষয়ে জেলা কমিটির সুপারিশের পর কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলেই কেবল চূড়ান্তভাবে বহিস্কৃত হবে এবং অপরাধ প্রমানিত না হলে তার শাস্তি মওকুফ হবে। কার্যনির্বাহী সংসদ তিনমাসের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন করিবে নতুবা শাস্তি মওকুফ বলিয়া গণ্য হবে।

তিনি আরও বলেন, গত ৬/১০/২০১৯ খ্রি. জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ( বর্তমান সাবেক) বীর মুক্তিযোদ্ধা লে.কর্ণেল (অব.) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরু ( বীর প্রতীক) এমপি’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ( বর্তমান সাবেক) জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন ভূঁইয়া’র সঞ্চালনায় শিল্পমন্ত্রী এডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন (এমপি) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নরসিংদী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে দুইটি থানা কমিটি ঘোষণা করেন। সদর থানা কমিটিতে আমাকে আহবায়ক ও কফিল উদ্দিন ভূঁইয়াকে সদস্য সচিব নির্বাচিত করে ৩০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি এবং মাধবদী থানা কমিটিতে প্রায়ত সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সফর আলী ভূঁইয়াকে আহ্বায়ক ও আলাউদ্দিন আল আজাদকে সদস্য সচিব নির্বাচিত করে ৩৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়। গঠনতন্ত্রের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে আমাকে অন্যায়ভাবে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। আমার আহবায়ক কমিটিতে স্থান পাওয়া ১৪ নং সদস্য আ. বারিক মিয়াকে আহবায়ক করা হয়। যা কিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র বিরোধী বলে আমি মনে করি। শুধু তাই নয় মাধবদী থানা কমিটিতেও একই পুনরায় ভিত্তি ঘটেছে। মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সফর আলী’র মৃত্যুর ৪০ দিন না যেতেই কাউকে কিছু না বলে অত্র কমিটির সদস্য মো. সিরাজুল ইসলামকে আহবায়ক নির্বাচিত করেন। এতে করে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আমরা স্থানীয় ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের সাথে সভা করেছি। তারা আমাদেরকে বৈধ ঘোষণা করেছে। তাদের দাবী ইউনিয়ন গুলোর সন্মেলন করার। আমরা তাদের মতামত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি এবং দ্রুত এবং অল্পসময়ের মধ্যেই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সন্মেলন গুলো শেষ করে নরসিংদীতে হাইব্রিড মুক্ত আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত করবো, নৌকার ঘাঁটিতে রুপান্তরিত করে বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করবো ( ইনশাআল্লাহ)। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।