
জুরাইস ইসলাম মেহেরপুর ।।
অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সুখের আশায় একই এলাকার আবাসনের বাসিন্দা সোনালীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন গোলাম হোসেন। কিন্তু সুখ মেলেনি। এবার দুই স্ত্রীর অত্যাচারে শেষ পর্যন্ত নিজের মোটর সাইকেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, নিজের দোকানেও ভাংচুর চালিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনীর নওপাড়া বাজারে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। গোলাম হোসেন। পেশায় ইলেক্ট্রীক মিস্ত্রি সংসারে রয়েছে দুই স্ত্রী ।
প্রত্যক্ষদর্শী নওপাড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানায়, দুপুরের দিকে দোকানে আসেন গোলাম হোসেন। সে সময় বেশ বিমর্ষ ছিলেন তিনি। বেশ কয়েকদিন ধরে একই অবস্থা। কারো সাথে তেমন কথা বলতেন না। সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করেই তিনি দোকান ঘর ভাংতে শুরু করেন। তাকে কয়েকজন ব্যবসায়ি নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে তাদেরকে মারার জন্য ছুঠে যান গোলাম হোসেন। এর পরই নিজের ব্যবহৃত আরকে ১০০ সিসি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। বাজারের ব্যবসায়ী মিলন হোসেন জানান, হঠাৎ কালো ধোয়া দেখে সকলেই রাস্তায় গিয়ে দেখতে পান মোটরসাইকেল জ্বলছে। পরে গোলামকে স্থানীয়রা আটকিয়ে রাখে ও পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গোলাম হোসেন প্রথম স্ত্রী আল্পনা ও তার তিন ছেলেকে রেখে বছর দেড়েক আগে ভাটপাড়া আবাসনের বাসিন্দা এক সন্তানের জননী সোনালী খাতুনকে বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রী আলপনা স্বামীর প্রতি উদাসীন ও নানা ধরনের অত্যাচার করায় সামান্য সুখের আশায় তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এখানেও শুরু হয় অশান্তি। প্রথম স্ত্রীর কাছে গেলে দ্বিতীয় স্ত্রী ঝগড়া করে, আর দ্বিতীয় স্ত্রীর সংসারে গেলে প্রথম স্ত্রী ঝগড়[া করে। এই নিয়ে চরম অশান্তি বিরাজ করছিল গোলাম হোসেনের সংসারে।
গোলাম হোসেনের বড় ছেলে রাজন হোসেন জানায়, কয়েকদিন যাবত আমার দুই মাকে নিয়ে আমার বাবা খুব অশান্তিতে আছে। শুনেছি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে উন্মাদ হয়ে পড়ে। কারো সাথে কথাও বলতো না। যে মোটরসাইকেলটি আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে সেটি আমি ও আমার বাবা দুজনই ব্যবহার করতাম।
প্রথম স্ত্রী আলপনা জানান, আমাকে রেখে সুখের আশায় দ্বিতীয় বিয়ে করে। আমার অধিকার না দিয়ে সে বিয়ে করলো। আমাকে দেখবে কে? দ্বিতীয় স্ত্রী সোনালী খাতুন জানায়, আমাকে যে প্রতিশ্রæতি দিয়ে বিয়ে করেছে তার একটিও রাখেনি। ফলে মাঝে মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। তবে নিজের মোটরসাইকেল পুড়িয়েছে এমন ঘটনা কেন ঘটিয়েছে তা জানিনা।
বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির আবুল বাসার জানায়, সংসারে যা কিছুই হোক না কেন, মোটরসাইকেল পোড়ানো এবং দোকান ঘর ভাংচুর করা ঠিক হয়নি। এতে বাজারের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। তবে তিনি মানসিক ভাবে সুস্থ আছেন কিনা পরিবারের কাছে খোঁজ নেয়ার কথা জানান।
দুই স্ত্রীর অত্যাচারে প্রকাশ্যে মোটরসাইকেলে আগুন দেয়ার ঘটনা এলাকায় চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।