জুরাইস ইসলাম মেহেরপুর।।
মেহেরপুরের তিনটি উপজেলার বিভিন্ন মাঠে পর্যাপ্ত পরিমান কলার চাষ হচ্ছে। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে চলতি মৌসুমে জেলায় কলা চাষ হয়েছে এক হাজার ৫ শত হেক্টর জমিতে। বর্তমানে রং কলা মেহেরপুরে জয়েন্ট গভর্নর, মেহের সাগর, বাইশছড়ি, দুধসর, সবরি, চাপা, চিনিচাঁপা সহ বিভিন্ন ধরনের কলার চাষ হচ্ছে। এই কলা চাষ, ব্যবসা ও পরিবহনের সাথে জড়িত রয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। জেলার চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে কলার চাষ করে। একবার চারা রোপন করে ২৪ মাসে ৩ বার ফলন পাওয়া যায় কলা চাষে। কম খরচে বেশি লাভ, উর্বর মাটি ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় কলা চাষ কাজে শিক্ষিত যুবকরাও বেকার চলা ফেরা না করে কলার চাষ আবদ শুরু করেন।
সদর উপজেলার বিধধারপুর গ্রামের কলাচাষি আব্দুল আল মামুন বলেন আমি চাকরী আশায় না থেকে- আমি এক একর জমিতে সবরি কলা ও রংকলা,চাপাকলা চাষ করেছি। জমি থেকেই ব্যবসায়ীরা ৪০০থেকে ৫০০ টাকা দামে কাঁদি হিসেবে কিনে নেয়। প্রতি কাদিতে গড়ে ১০ ছড়ি কলা থাকে। আনুমানিক ১২০-১৩৫ টি কলাও থাকে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মেহেরপুরের এ কলার চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে জেলা থেকে প্রতিদিন ছোট বড় মিলিয়ে কমপক্ষে ৩০ ট্রাক কলা বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। তবে বেশিরভাগই কুষ্টিয়া, খুলনা ও ঢাকায় যায়। একই কথা জানালেন কলা চাষী ইউসুফ আলীসহ অনেকেই।
কলার দাম ও চাহিদা কেমন জানতে চাইলে মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর গ্রামের কলা ব্যবসায়ী হাসিবুর জানান- তিনি ৮-১০ বছর ধরে কলার চাষ করেছেন। এখনো কলা চাষের সাথে জড়িত হলেও ব্যবসায়ী হিসেবে নিয়মিত কলা পাঠিয়ে থাকেন দেশের বিভিন্ন জেলায় । আমরা কাঁদি হিসেবে কলা কিনে পাঠিয়ে দেই। সবরি কলা ১২০ টি কলার এক কাঁদির দাম ৩৫০ টাকার বেশি। সবরি কলা প্রতি হালি বাগানে কেনা পড়ে ১৮ টাকার মত। এবং বাইশছড়ি কলার কাঁদিতে গড়ে ২৪০ টি কলা পাওয়া যায়। এ কলার দাম ৫০০-৬০০ টাকা এবং এক হালি কলা ২০ থেকে২২ টাকা দাম পড়ে।
গাংনী উপজেলার হেমায়তপুর গ্রামে উজ্জল মিয়া বলেন আমি লেখা পড়া পাশাপাশি পাচঁসাত বছর কলার চাষ আবাদ করি আমার এখন দুই বিঘা জমিতে কলার চাষ করি। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে আমার বছরে এক থেকে দেড় দুই লাখ টাকা লাভ হওয়ার সম্ভাব। এই আবাদে সবথেকে সুবিধা হলো একটি গাছে কলার কাঁদি আসলে মা গাছের সাথে একটি চারা রেখে বাকি গুলো কেটে ফেলি এই ভাবে তিন বার অল্প খরচে লাভ বান হওয়া যায়।
কলা চাষীদের তথ্যমতে, এক বিঘা জমিতে কলার চাষ করতে প্রথম বছরে সর্বোচ্চ ১ থেকে ২০হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিবিঘা জমিতে প্রতি বছর প্রায় ৪ শত কাঁদি কলা পাওয়া যায়। যা ক্ষেত থেকে পাইকারী বিক্রি করলে এক লাখ ২০ হাজার থেকে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়। প্রথম অবস্থায় খরচ বেশি হলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় বার সার-বিষ ও পানি সেচ বাবদ সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা করে খরচ যথেষ্ঠ। এতে বাকি ২ বার প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এক লাখ টাকা করে মোট ২ লাখ টাকার কলা বিক্রি করা যায়।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামসুল আলম বলেন -কলা এখন বারোমাসের ফসল। কলা চাষিদের বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধানে উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তারা সারা দিন মাঠে থাকছেন। চাষিদের কলা চাষে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। সারা দেশে মেহেরপুরের কলার চাহিদা থাকায় কৃষি বিভাগ ব্যবসায়ী ও কৃষকদের কলাতে কার্বাইড ও বিষ স্প্রে না করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছে।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮