মেহেরপুর প্রতিনিধি ।।
মেহেরপুরের গাংনীর ভাটপাড়া গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে মিঠুন এর শখ আদী কালের পালকী বা টমটম গাড়ীকরে বর সেজে বিয়ে করবে যে কথা সেই কাজ তাই হেলিকপ্টার কিংবা নামী দামী গাড়ি নয়, গ্রামীণ ঐতিহ্য বুকে ধারণ করে এবার টমটমে চড়ে বিয়ে করেছেন বর মিঠুন। সৌদি প্রবাসী ওই বর শুধু টমটমে চড়ে বিয়েই করেন নি। নববধুকে নিয়ে ঘুরেছেন সাত সাতটি গ্রামে। বরের এই কর্মকান্ডে রীতিমত হৈচৈ পড়ে গেছে এলাকায়। অনেকেই টমটমে চড়ে বিয়ে করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
কণের বাড়ী মেহেরপুর সদরের কালীগাংনী গ্রামের আবু বক্করের মেয়ে পিংকী।
একসময় নবাবী বাহন ছিল টমটম। বছর বিশেক আগেও টমটমের প্রচলন ছিল। কালের বিবর্তনে আর যানবাহনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় তা হারিয়ে গেছে। মাঝে মধ্যে দু’একজন টমটমে চড়ে বেড়াতে বের হন। কিন্তু এবারই ঘটলো ব্যতিক্রমি কাজ। সৌদি প্রবাসী মিঠুনের বাবার ইচ্ছানুযায়ি টমটমে চড়ে বিয়ে দিবেন ছেলে মিঠুনকে। তেমনি মঙ্গলবার মিঠুনকে টমটমে চড়িয়ে নেয়া হয় কণে বাড়ি। বিয়ের সকল পর্ব শেষে বর কণেকে ঘোরানো হয় সাত সাতটি গ্রাম।
টমটমে বর ও নববধুকে দেখতে শুধু বাড়িতেই নয়, বিভিন্ন সাজে সেজে ভীড় জমেছিল রাস্তার দু’পাশে গ্রামের লোকজন। রাজা রাণীর বেশে দুজনকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন পথচারী ও এলাকাবাসী।
প্রতিক্রিয়ায় মিঠুন জানান, লোকজ ঐতিহ্য সরুপ বাবার ইচ্ছে অনুযায়ি তিনি টমটমে চড়ে বিয়ে করেছেন। বিয়েতে টমটম গাড়ির ব্যবহার অনেককেই মুগ্ধ করেছে। গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে যুবসমাজকে টমটমে বিয়ের আহবান জানান তিনি।
মিঠুনের বাবা আলী হোসেন জানান, তার তিনটি সন্তান প্রতিবন্ধী। সব শেষে এ ছেলে ভুমিষ্ঠ হবার পর শখ করে টমটমে চড়ে বিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রæতি বদ্ধ হন। সে অনুযায়ি বিয়ের আয়োজন করা হয়।
গাংনী মহিলা ডিগ্রী কলেজ বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রমজান আলী জানান, আগে রাজা বাদশা কিংবা জমিদার বাবুরা টমটমে চড়ে বেড়াতে কিংবা বিয়ের কাজটি সারতেন। যান্ত্রিকতার যুগে সেসব বেমানান। তবুও গ্রামীণ ঐতিহ্যর এ বাহন আজো আছে তবে তা অপ্রতুল। যদিও এখন হেলিকপ্টার সহ নামী দামী গাড়ি ব্যবহার হচ্ছে বিয়েতে। তবুও কিছু মানুষ শখের বশে টমটমে চড়ে বিয়ে করতে যাচ্ছে। সৌদি প্রবাসী মিঠুনের এ শখ গ্রাম বাংলার মানুষের মধ্যে ফুটে উঠুক এ কামনা করেন তিনি।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮