
বুধবার (২৬ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর মোঃপুর থেকে হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩। গ্রেফতারকৃতর নাম জাহিদুল ইসলাম ওরফে হেমায়েত (৫২)। এসময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় কবিরাজি চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের ১২৯ টি আংটি,৩ টি শঙ্খ,১ টি আলাদিনের চেরাগ,২টি ক্রেস্ট,১৫ টি কবিরাজি সংক্রান্ত বই,১ টি পিতলের পাঞ্জা ও কবিরাজি সংক্রান্ত অন্যান্য সরঞ্জামাদি।
এ বিষয় ২৭ অক্টোবর দুপরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ব্রিফিং করেন আইন ও গন মাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মইন। তিনি বলেন,গ্রেফতারকৃত হেমায়েত পেশায় ছিলেন একজন কবিরাজ। তার অন্যতম সহযোগী সোবহান উক্ত হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি।
২০০৫ সালে জানুয়ারি মাসে সোবহান মনুকে মাথা ব্যাথার চিকিৎসার জন্য কবিরাজ হেমায়েত এর নিকট নিয়ে আসে। মনুর স্বামী ঢাকায় চাকুরির সুবাদে কবিরাজ হেমায়েতে সাথে এক পর্যায় সুসম্পর্ক হয়। প্রতিমাসে সংসারের খরচ চালানোর জন্য মনুর নিকট টাকা পাঠাত তার স্বামী। মনু সেই টাকা জমিয়ে কাপড়ের ব্যবসা করত। কাপড়ের ব্যবসা এবং স্বামীর পাঠানো টাকা জমিয়ে মনু কয়েক লক্ষ টাকা পুজি করে। সুসম্পর্কের কারনে হেমায়েত মনুর সরলতার সুযোগে তার টাকা পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দি আটে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হেমায়েত ও সোবহান মনুকে চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে দলিলপত্রে টিপসই নেয়। মনুর জ্ঞান ফিরে আসলে দলিলের বিষয়ে জানতে পেরে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সোবহানের সহযোগিতায় হেমায়েত মনুকে কুপিয়ে এবং গলা কেটে তার হত্যা নিশ্চিত করে। এরপর রাতের কোন একসময় মনুর মৃতদেহ বস্তাবন্দি করে ধান ক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যায়। বস্তাবন্দি মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতর বোন বাদী হয়ে বাগেরহাট থানায় হেমায়েতসহ ৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যার মামলা নম্বর-০৯। মামলাটির তদন্ত শেষে সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে ২০০৯ সালের জুন মাসে বিজ্ঞ আদালত আসামি হেমায়েত ও সোবহানকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ প্রদান করেন।
হত্যার পর থেকে হেমায়েত দেশে ও ভারতে কবিরাজের ছদ্মবেশে ১৭ বছর পলাতক ছিলেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।