
দক্ষিন কেরাণীগঞ্জ থেকে পুলিশি ছদ্মবেশধারী আন্তঃজেলা দলের দুর্ধর্ষ ৩ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০৷
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) গভীর রাতে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় ডাকাত দল পুলিশি ছদ্মবেশে ডাকাতির প্রস্তুতি অবস্থান করছিল। আটককৃতরা হলেন ডাকাত সর্দার জসিম মোল্লা (৩৫) ও তার প্রধান ২ সহযোগী’মোঃ জাহিদুল কাজী (২৫),মোঃ ইয়াসিন আলী (৩০)। এসময় অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন কৌশলে পালিয়ে যায়।
আটককালে ডাকাত দলের কাছ থেকে থেকে ৩টি স্বর্ণের চেইন, ১টি রুপার ব্রেসলেট, ২টি ল্যাপটপ, পুলিশের এসআই র্যাংক ব্যাজসহ ২টি হাফ শার্ট, ২টি প্যান্ট, ২টি ক্যাপ, ২টি বেল্ট, ১টি ওয়াকিটকি, ২ জোড়া কালো বুট, ১টি রিফলেকটিং জ্যাকেট, ২টি রেইন কোর্ট, ১টি খেলনা পিস্তল (কালো কাভারসহ), ১টি চাপাতি, ২টি সুইচ গিয়ার চাকু, ৩টি লোহার ফোল্ডিং স্টিক, ১টি ড্রিল মেশিন, ২টি স্ক্রু ড্রাইভার, ১টি রেঞ্জ, ২টি হাতুরি, ১টি কাটার মেশিন, ২টি প্লাস, ১টি প্লাস কাটার, ৬টি লোহার রডের টুকরা, ১টি করাত, ২টি ছেনি কাটার, ১টি দুরবিন, ১টি ল্যান্ড ফোন, ১টি ডিজিটাল ওয়েট মেশিন, ৩টি মাউস, ৫টি কাটারের ব্লেড , ১টি বাংলাদেশ পুলিশ লিখিত লেমিনেটিং কাগজ, ১টি মহিলাদের ছদ্মবেশ ধারণের আলগা চুল, ৫টি মোবাইল ফোন ও নগদ- ৫৩ হাজার ৫০ (তিপ্পান্ন হাজার পঞ্চাশ) টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃত জসিম মোল্ল্যা উক্ত আন্তঃজেলা দুর্ধষ ডাকাত দলের সর্দার। তার নেতৃত্বাধীন উক্ত ডাকাত দল শরিয়তপুরের জাজিরাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় একটি ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করে আসছিল। তারা সংঘবদ্ধভাবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি করাকালে কেউ বাধা প্রদান করলে জসিম মোল্যা তার সাথে থাকা দেশীয় অস্ত্র (সুইচ গিয়ার চাকু, চাপাতি, হাতুড়ি, লোহার রড ইত্যাদি) দিয়ে তাদেরকে গুরুতর জখম করে ডাকাতি কার্য সম্পন্ন করত। জসিম শরীয়তপুরের জাজিরা এলাকায় গত ৮ সেপ্টেম্বর সংঘটিত চাঞ্চল্যকর রিপন হত্যা মামলার প্রধান আসামী। এছাড়া সে পুলিশের পোশাক পরিধন করে ভূয়া পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে বড় বড় ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মোটা অংকের চাঁদা গ্রহণ করত। এতে কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে সে তার ডাকাত দল নিয়ে তাদের উপর অক্রমন করে তাদেরকে মারধর ও জখম করে তাদের সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যেত। জাজিরা এলাকায় সে ছিল এক মুর্তিমান অতংকের নাম। তার হীনকর্মে ঐ এলাকার লোকজন ভীত ও সন্ত্রস্থ থাকত। এছাড়া জসিম মোল্ল্যার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, প্রতারণা, মারামারি ও হত্যা চেষ্টাসহ মোট ১৩টি মামলা রয়েছে যার মধ্যে ১টি মামলায় সে সাজাপ্রাপ্ত আসামী বলে জানা যায়।
র্যাব ১০ ‘র অধিনায়ক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা বেশ কিছুদিন যাবৎ ঢাকা, নরসিংদী, শরিয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশি ছদ্মবেশে এবং ডাকাতির অভিপ্রায়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্বর্ণালংকার, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ ডাকাতি করত।
এ ব্যাপারে গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা রুজুর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।