
গাজীপুর থেকে একজন ফাঁসির আসামীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩। গ্রেফতারকৃতর নাম শারমিন আক্তার (২৫)। সে তার শাশুড়ীকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী।
গত মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) তাকে গাজীপুরের গাছা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানা যায়,আসামী শারমিন আক্তার ২০১৬ সালে লক্ষীপুর জেলায় শ্বাশুড়িকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক ছিলেন। পরকীয়া প্রেমে বাঁধা দেয়ায় তিনি শ্বাশুড়িকে নৃশংসভাবে খুন করেন।
র্যাব জানায়, নিহত জাকেরা বেগম লক্ষিপুর জেলার সদর উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের প্রবাসী রুহুল আমিনের স্ত্রী।
২০১৪ সালে জাকেরার ছোট ছেলে আবুল বাশারের সাথে আসামী শারমিনের বিয়ে হয়। জীবিকার তাগিদে স্বামী বাশার গাজীপুরে ইলেকট্রিকের কাজ করে । স্বামীর অনুপস্থিতে আসামী শারমিন প্রতিবেশী জামালের সাথে পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।
জামাল ভিকটিম জাকেরাকে আম্মা হিসেবে সম্বোধন করায় তিনি নিয়মিত বাসায় যাতায়াত করত। একদিন তিনি জামাল এবং শারমিনকে অপ্রীতিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন। পরে বিষয়টি তিনি তার ছেলে বাশারকে জানায়। পরকিয়ার বিষয় বাশার জানার পর শারমিনকে মারপিট করে। ক্ষুব্ধ হয়ে শারমিন ও প্রেমিক জামাল ভীকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই শারমিন তাদের বাড়ির ছাদের গেইট খোলা রাখে। গভীর রাতে জামাল তার বন্ধু নাজিম ও জসিমকে নিয়ে ছাদের গেইট দিয়ে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে। পরে আসামীরা জাকেরার রুমে প্রবেশ করে তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। উক্ত ঘটনাকে ডাকাতির ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার জন্য তারা জাকেরা এবং শারমিনের আলমারি ভেঙ্গে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে বাড়ির ছাদ দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে শারমিন ডাকাত চিৎকার চেঁচামেচি ও কান্নাকাটি শুরু করে। তার ডাক চিৎকারে পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। পরে তারা পুলিশ খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি তাদের কাছে সন্দেহজনক মনে হয়। পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে শারমিন তার শাশুড়ীকে হত্যা পরিকল্পনা এবং ডাকাতির ঘটনা সাজানোর বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদান করে। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে প্রেমিক জামাল, নাজিম ও জসিমকে গ্রেফতার করে।
উক্ত মামলায় সকলে জেল খেটে জামিনে বের হয়। এরপর সকল আসামীরা পলাতক থাকে । দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০২২ সালের ২৬ নভেম্বর পুত্রবধূ শারমিন আক্তারসহ ৪ জনকে ফাঁসির আদেশ এবং ১০,০০০ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন।
র্যাব ৩’র মিডিয়া অফিসার ফারজানা হক জানান, উক্ত মামলার অন্যান্য আসামী জামাল, নাজিম ও জসিম এখনও পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।