
মোঃ সৌরভ হোসাইন (সবুজ) স্টাফ রিপোর্টার সিরাজগঞ্জ।।
উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, লোকসান ও পুঁজি হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন সিরাজগঞ্জের পোল্ট্রি শিল্পের অনেক উদ্যোক্তা। ঋণগ্রস্ত হয়ে বেশ কয়েকজন খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। জেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা ছোট-বড় খামারের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজার। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার জানিয়েছেন, এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় ৬০ ভাগ খামার। বেকার হয়ে পড়ছেন শিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার মানুষ।
লোকসান গোনা উদ্যোক্তারা বলছেন, পোল্ট্রি খাদ্য, বাচ্চা ও ওষুধের মূল্য বেড়েছে দফায় দফায়। কিন্তু সে অনুপাতে উৎপাদিত ডিম ও মুরগির দাম বাড়েনি। এ ছাড়া অজ্ঞাত রোগের প্রাদুর্ভাবেও উৎপাদন কমে গেছে।
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে প্রতি বস্তা মুরগির খাদ্যের দাম বেড়েছে মানভেদে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। বর্তমানে ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা ব্রয়লার মুরগির খাদ্য ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০, সোনালি মুরগির খাদ্য ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ ও লেয়ার মুরগির খাদ্য ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উৎপাদিত ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি ও সোনালি মুরগি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকায়। উদ্যোক্তারা বলছেন, পোল্ট্রির খাদ্যের দাম একবার বাড়লে তা আর কমছে না, কিন্তু মুরগি বা ডিমের দাম এক সপ্তাহ বাড়লে পরের সপ্তাহেই কমছে। এর ওপর যোগ হয়েছে নতুন রোগ ‘ফাউল টাইফয়েড’। রোগে আক্রান্ত হলে এক দিনেই মারা যায় খামারের কয়েক শ মুরগি।
বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলায় ২ হাজার ৬৫৭টি নিবন্ধিত খামারে রয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৯৪ হাজার ২৫৯টি মুরগি। অনিবন্ধিত খামার ও খামারে থাকা মুরগির সংখ্যা এর প্রায় দ্বিগুণ।
সদরের শিয়ালকোল এলাকার হেলাল আহমেদ বলেন, খাদ্য, ওষুধসহ সবকিছুর দাম বেশি। ডিমের দাম বাড়লে আবার কমে যায়। ওষুধের দাম বাড়লে আর কমে না। এতে খামারিরা লোকসানের মুখে আছেন।
সলঙ্গার খামারি এস কে আতিক ও গিয়াস সরকার বলেন, বর্তমানে পোল্ট্রি খামারিদের অবস্থা খারাপ। মুরগি উৎপাদন করে মাংস ও ডিমের দামে বাজারে কোনো সমন্বয় নেই।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার বলেন, মাঝে মধ্যে টিকা কার্যক্রম চালানো হয়, যা সুলভমূল্যে। পোল্ট্রি খাদ্যের দাম বাড়ার ফলে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তবে খামারিদের সরকারিভাবে প্রণোদনা ও বাজার তদারকির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।