
মোঃ সৌরভ হোসাইন ( সবুজ)
স্টাফ রিপোর্টার সিরাজগঞ্জ।।
আদিগন্ত মাঠ জুড়ে হলুদের সমারোহ। মাঠের দিকে তাকালে চোখ ফেরাতেই মন চায় না। দৃষ্টিনন্দন সরিষা ফুলে ছেয়ে গেছে পুরো মাঠ। যেন বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের হলুদ স্বপ্ন। এমনটাই নয়নাভিরাম দৃশ্য চোখে পড়ে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার মাঠগুলোতে। চলতি বছরে আবহাওয়া ভালো থাকলে সরিষার বাম্পার ফলনের (স্বপ্ন) দেখছেন এলাকার সরিষাচাষীরা। উপজেলার মাটির গুণগত মান ভালো হবার ফলে সব ধরণের কৃষিপণ্য উৎপদন হচ্ছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো রবি মৌসুমের কৃষিপণ্য সরিষা। চলতি রবি মৌসুমে উপজেলার প্রায় সবগুলো সরিষাক্ষেতে ফুলে ফুলে ভরে গেছে। গাছে ফুটতে শুর“ করেছে সরিষাফুল। অধিকাংশ সরিষাক্ষেতে বীজ আসতে শুরু করেছে। দখিনা বাতাসে দোল খাচ্ছে সরিষা ফুল ও তরতাজা বীজগুলো। যাতে করে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন সরিষা চাষিরা। অধিক ফলন ও মুনাফার আশায় কৃষকদের মুখে ফুটেছে হাসি। চারিদিকে গুণগুনিয়ে মধু সংগ্রহ করছে মৌমাছির দল। এখনো পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকার ফলে এ বছরে সরিষার গাছ রোগ-বালাই মুক্ত রয়েছে।
উপজেলার বড়হর গ্রামের সরিষাচাষী আবুল হোসেন বলেন, চলতি বছরে আমি ১০বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। গত বছরে আবহাওয়া ভালো ছিলো। তুলনামূলকভাবে দামও ভালো পেয়েছি। যার ফলে এবছরে আবারো সরিষা চাষ করছি।
উপজেলার দবিরগঞ্জ গ্রামের সরিষাচাষী মজিবর বলেন, এই বছরে আমি ০৭ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। চলতি বছরে এখনো পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে। কোনরূপ প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে সরিষার বাম্পার ফলন হবার সম্ভাবনা আছে। বাজারদর ভালো থাকলে এবছরে অধিক লাভ হবার সম্ভাবনা আছে।
বিনায়েকপুর গ্রামের সরিষাচাষী জয়নাল শেখের সাথে কথা হলে তিনি জানান, গত বছরে সরিষা চাষ করে ভালো লাভবান হবার ফলে এই বছরেও ১৫ বিঘা সরিষার আবাদ করেছি। মাটির গুণগত মান ভালো ও আবহাওয়া পক্ষে থাকায় এখনো পর্যন্ত সরিষার কোন রোগ বালাই দেখা দেয়নি। বরাবররে মতোই কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী ও নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সরিষার আবাদ করছি। মৌসুমের শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলে সরিষার বাম্পার ফলন ও ভালো লাভের সম্ভাবনা আছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন, চলতি বছরে এই উপজেলায় লক্ষমাত্রা প্রায় ২০ হাজার ৫’শ ৬০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হচ্ছে। প্রতি হেক্টরে দেড় মেট্রিক টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উপজেলায় মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ৭শ ৫০ মেট্রিক টন। ভালো ফলনের লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে সরিষা চাষীদের সব ধরণের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও সরিষা চাষীদের সরকারী প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। সরকারী প্রণোদনা পাওয়ায় ও সরিষার ফলন ভালো হবার ফলে এই উপজেলায় ক্রমান্বয়ে সরিষা চাষ বাড়ছে এবং ভবিষ্যতেও বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এলাকার অনেক সরিষাচাষীরা।