
ইবি প্রতিনিধি।।
বহুল আলোচিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে
দীর্ঘ পাঁচ মাস পর গৃহীত হয়েছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। ঘটনায় অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ তার চার সহযোগীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (১৫ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের
ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ এ তথ্যটি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘সকাল ১১টায় ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাইকোর্টের প্রতিবেদনের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস কোড অব কন্ডাক্ট-১৯৮৭ এর ২য় অধ্যায়ের ৮ম ধারা মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে আগামী এক বছরের জন্য তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর থেকেই এটি কার্যকর হবে।’
বহিষ্কৃত অন্য চারজন হলেন- ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম এবং চারুকলা বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মী।
এদিকে অভিযুক্তদের এমন শাস্তিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ঘটনার ভুক্তভোগী ফুলপরি খাতুন। তার সাথে করা নির্যাতনের মাত্রার বিবেচনায় এ শাস্তি তাদের জন্য যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘তারা আমার উপর যে পরিমাণ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে তাতে তাদের এক বছরের শাস্তি কোনোভাবেই হতে পারেনা। এতে আমি সন্তুষ্ট না বরং আরো আতঙ্কিত। কারণ, তারা একবছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিরে এসে আমার প্রতিশোধ নিবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমি মনে করি, আমি সঠিক বিচার পাইনি। আমি চাই তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হোক।’
প্রসঙ্গত, গত ১১ ও ১২ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী ফুলপরীকে রুমে ডেকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার চার সহযোগীর বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শাখা ছাত্রলীগ পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত হয় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটিও। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাাণিত হওয়ায় গত ১ মার্চ বিচারপতি জে বি এম হাসান ও রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এর নির্দেশনায় দোষী সাব্যস্ত পাঁচ ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এরপর গত ১২ জুন ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আত্মপক্ষ সমর্থনে শেষবারের মতো সাক্ষাৎকার দিতে ক্যাম্পাসে আসেন তারা। সর্বশেষ আজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাইকোর্টের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে তাদের বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।