মেহেরপুর প্রতিনিধি।।
মেহেরপুর ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে জমির মালিকরা। ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কর্মকর্তা কর্মচারিদের স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের বেড়াজালে সঠিক মূল্য না পেয়ে সর্বশান্ত হচ্ছেন ভূমির মালিকরা। অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে মানা হচ্ছেনা ২০১৭ সালের ভূমি অধিগ্রহণ আইন। ফলে মামলার বেড়াজালে থমকে যাচ্ছে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড।
তথ্যমতে, ২২ জেলায় একটি করে পলেটেকনিকাল ইনস্টিটিউট নির্মান হবার কথা ছিলো। ২১ জেলায় সম্পুর্ন হলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় বন্ধ হয়ে গেছে মেহেরপুর পলেটেকনিকাল ইনস্টিটিউট নির্মান। বাংলাদেশের সব উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মান হলেও ভুমি অধিগ্রহন জটিলতায় মুজিবনগর মডেল মসজিদের কাজ এখোনো আলোর মুখ দেখিনি। মেহেরপুরে রেললাইন, মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্স, চেকপোস্ট, বিশ^বিদ্যালয়সহ অনেক উন্নয়নমুলক কাজ মন্ত্রীসভায় পাশ হয়েছে যা অল্পদিনেই ভূমি অধিগ্রহন হবে তা নিয়ে মেহেরপুরের জমির মালিকরা আতঙ্কিত ।
ভূমির মালিকদের অভিযোগ, জমি অধিগ্রহণ আইনের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৪ ধারায় উল্লেখ আছে জেলা প্রশাসক যৌথ তালিকা প্রস্তুত করে শ্রেনী পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু জেলা প্রশাসকের সে সিদ্ধান্তকে অমান্য করে মেহেরপুর ভুমি অধিগ্রহণ শাখা উচ্চমূল্যের জমির দাম হাঁকা হচ্ছে নি¤œ শ্রেনীর জমির দামে। জমির মুল্য নিধারণের সময় মানা হচ্ছেনা কোন নিয়ম নীতি। বাজার মূল্যের এক চতুর্থাংশও দেওয়া হচ্ছেনা জমি মালিকদের। আবার যেখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ওই জমিকে দেখানো হচ্ছে পরিত্যক্ত। মূল্য নির্ধারন বিষয়ে জানতে চাইলে ভূমি আধিগ্রহণের কর্মচারীরা জমির মালিককে হুমকী ধামকি দিয়ে ভয় ভীতি দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের। ফলে জমির মালিকরা জেলা প্রশাসনের কাছে বিচার না পেয়ে দারস্থ হচ্ছেন আদালতের। মামলা জটিলতায় থমকে যাচ্ছে সরকারের উন্নয়ন।
মুজিবনগরের তোয়াক্কন নেছা জানান, তার একমাত্র বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তিনি পরিবারের লোকজনকে নিয়ে মানববন্ধন করেছেন ও প্রশাসনের কাছে লিখত আবেদন করেও কোন সুরাহা মেলেনি।
মেহেরপুর বামনপাড়া মৌজার জমির মালিক আশরাফুল হক জানান, তার একবিঘা জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। তার পাশের জমি বিক্রয় হচ্ছে প্রায় ১২ লাখ টাকা শতাংশ। অথচ তার জমির মূল্য নির্ধারণ করেছে মাত্র ৫৭ হাজার টাকা শতাংশ। সরকার নিধারিত সর্ব নি¤œ মূল্যের চেয়েও কম মূল্য নিধারন করা হয়েছে। এমনকি আপত্তি দাখিলের জন্য মাত্র ২৪ ঘন্টা সময় দেওয়া হয়েছে।
বন্দর গ্রামের মোঃ গাউছুল জানান, তাদের তিনজন শরিকের ১২ কাঠা জমি সরকার অধিগ্রহন করেছে। আজো কোন টাকা পয়সা দেয়া হয়নি। জমির উপর লিচু গাছ ছিলো সেগুলোও দেয়নি। সব শরিকরা বাধা দিলে পুলিশ এসে ভয় ভীতি দেখিয়ে জোর করে কাজ করছে।
মেহেরপুরের সাবেক পৌর মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু জানান, তার ছেলের একমাত্র সম্বল বাড়ি করা জমিতে মুজিবনগর মডেল মসজিদ নির্মাণেন জন্য অধিগ্রহণে মেতে উঠেছে। জমি অধিগ্রহণের নামে মেহেরপুরের ভূমি মালিকদের ওপর নির্যাতন ও হয়রানীর বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন তিনি।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক আজিজুল ইসলাম জানান, জমির মুল্য নির্ধারন করা হয় সেই মৌজার একবছরের ক্রয় বিক্রয়ের গড় অনুযায়ি। করো জমির মূল্য কম বেশি করার সুযোগ নেই। ভূমি মালিকরা জমির মুল্যের উপর আপত্তি জানানোর জন্য যে সময় আছে তাই পাবে। যদি কেউ তা না পায় তাহলে অভিযোগ করলে বিষয়টি তিনি দেখবেন বলেও আশ^স্ত করেছেন।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮