![](https://dainikajkerbangla.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
ত্রিশাল(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি।।
স্ত্রীর স্বেচ্ছাচারিতা ও জামাতকর্মী স্বামীর গ্রেফতারে ত্রিশালের দুই কমিউনিটি ক্লিনিকে যথোপযুক্ত স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার সেবাপ্রত্যাশী।
জানা যায়, আমিরাবাড়ী নামাপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার(সিএইচসিপি) পদে চাকরি করেন আকরাম হোসেন এবং একই পোস্টে তার স্ত্রী রোজিনা আক্তার চাকরি করেন মোক্ষপুর ইউনিয়নের গোকটাভিটা কমিউনিটি ক্লিনিকে। রোজিনার স্বেচ্ছাচারিতা ও আকরামের গ্রেফতারে পার্শ্ববর্তী এই দুই ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ যথোপযুক্ত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সরেজমিন ঘুরে ও সেবাপ্রত্যাশীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গোকটাভিটা কমিউনিটি ক্লিনিকটি চলছে চরম অনিয়ম দুর্নীতির মধ্যে। সিএইচসিপি রোজিনা আক্তারের সপ্তাহে ছয়দিন সকাল নয়টা থেকে তিনটা পর্যন্ত অফিস করার কথা থাকলেও তিনি নিয়মিত আসছেন না অফিসে। আসলেও প্রায় সময়ই এগারোটা থেকে বারোটার মধ্যে এসে আবার ঘন্টা খানেক থেকে চলে যান অফিস বন্ধ করে। তিনি সময় এবং নিয়মের কোনো তোয়াক্কা না করে উনার মনগড়া মতো ক্লিনিকে আসছেন এবং যাচ্ছেন। তিনি এবং তার স্টাফরা নিয়মিত অফিসে না আসায় প্রায়সময়ই ক্লিনিক বন্ধ পেয়ে অপেক্ষা করে ওষুধ না নিয়েই ফেরত যাচ্ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। এতে অনেক দূরের পথ পাড়ি দিয়ে ঔষধ নিতে আসা রোগীরা পড়ছেন ভোগান্তিতে।
মোস্তাফিজুর রহমান, মোস্তফা, আনোয়ারা, নাসিমা আক্তার সহ আরও কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারা এসব অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ করেন। সেবাগ্রহীতাদের অনেকেই ওষুধ বিতরণে স্বজনপ্রীতি ও বিক্রির অভিযোগও তুলেন। অন্যদিকে আমিরাবাড়ী নামাপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি আকরাম সপ্তাহখানেক আগে নাশকতার মামলায় গ্রেফতার হলে সেখানেও যথোপযুক্ত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না সেবাপ্রত্যাশীরা। আকরামের গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ক্লিনিক সভাপতি তৌফিক আহমেদ।
এবিষয়ে সিএইচসিপি রোজিনা আক্তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি সকাল নয়টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত প্রতিদিনই হাসপাতালে উপস্থিত থাকি। এসময় উনি অফিস না করার বিষয়ে প্রশ্ন করলে প্রতিবেদকের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, এলাকাবাসীর কে বলছে আপনি নাম বলেন, নামটা বলেন? উনার স্বামীর গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন, ওই কই, ওই কই মহাকাশে? আমার স্বামী মনে হয় মহাকাশে থাকে, সেটা তো আমার দেখার বিষয় না।
ওই ক্লিনিক প্রতিদিন খোলা থাকার বিষয়ে স্যারেই প্রত্যয়ন দিছে। আপনি কি নিউজ করবেন, না করবেন।
আপনারা কয় টাকার সাংবাদিক এটা আমাদের জানা আছে, করেন যায়া। আপনার যা নিউজ করার আমাদের কর্তৃপক্ষের কাছে জিজ্ঞেস কইরা করেন যাইয়া আমার কোন সমস্যা নাই।
জামাতকর্মী আকরাম হোসেন ও তার স্ত্রী রোজিনা আক্তারের অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নজরুল ইসলাম। দৈনিক স্বাধীন মত পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এবিষয়ে তার বক্তব্য জানতে চাওয়া হলেও তিনি প্রতিবেদককে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। তাঁর উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোন বক্তব্য দিবেন না বলে উল্টো সংবাদকর্মীদের ভয়ভীতি দেখানোর উদ্দেশ্যে তার নিজের মোবাইল দিয়ে প্রতিবেদকের ভিডিও ধারণ করেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ নির্ভর করে কি ধরনের তথ্য চাওয়া হয় তার উপর। তবে এক্ষেত্রে উনি খোঁজ নিয়ে প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে দেখার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন এমনটি জানাতে পারতেন