Dhaka , Monday, 30 June 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
সিলেট ও শ্রীমঙ্গলে ঝড় ও বজ্রাপাতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।। মানুষকে ভালোবাসেন বলেই তাদের টানে আমেরিকা ছেড়ে দেশের এসে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন- দেলোয়ার মোমেন।। শরীয়তপুরে পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা কালে জনতার হাতে যুবক আটক।। রামগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ আরাফাতের  নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তা সংস্কার।। রূপগঞ্জে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণ।। তিতাসের জিয়ারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাখাওয়াত হোসেনের শিক্ষকতার দুই যুগপূর্তি।। কোম্পানীগঞ্জে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার- স্বামী পলাতক।। নরসিংদী বৃষ্টির কারনে পশুর হাটে বেচা কেনা কম।। মায়ের সামনে পাঁচতলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু।। ঈদুল আযহা উপলক্ষে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে টানা ৮ দিন আমদানি রপ্তানি বন্ধ।। শেখ কামাল আইটি ট্রেনিংয়ে সারাদেশের মধ্যে প্রথম হয়েছে রাজাপুরের মশিউর রহমান তামিম।। সুন্দরগঞ্জের দহবন্দ ইউনিয়নে ভিজিএফ চাল বিতরণ।। কুমিল্লা পিটিআই কর্তৃক সততা নৈতিকতা ও শুদ্ধাচার পুরস্কার পেলেন- তানজুরুন নাহার।। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সদরপুরে বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর শুভ সূচনা।। সড়কতো নয় যেন ধান শুকানোর চাতাল।। তিতাসে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ভিজিএফের চাল বিতরণ অনুষ্ঠিত।। ঈদ উপলক্ষে হিলিতে বিনামূল্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে চাল বিতারণ।।  পাবনায় হত্যায় মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।। আই-ইইই ইবি স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চের সভাপতি পিয়াস সম্পাদক ইকবাল।। পাবনা জেলা স্কুল জাতীয় পর্যায়ে কুইজ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয়।। সিলেটে বৃস্পতিবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিপাত-ফের জলাবদ্ধতার শঙ্কা।। জনপ্রিয়তা ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রফিক আমার নামে মিথ্যাচার চালাচ্ছে- আবুল বাশার  বাদশা।। নিখোঁজের দুদিন পর মাদরাসা ছাত্রের মরদেহ মিলল ঘাটলার নিচে।। ঝালকাঠিতে হত্যা মামলায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন।। সুন্দরগঞ্জে পশুর হাট নিয়ে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে ৩ রাউন্ড গুলি বিনিময়- পুলিশসহ আহত ১০।। নোয়াখালীতে পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু।। পাবনায় শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নছিমন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ২ জন নিহত আহত -৭ জন।। রূপগঞ্জ কাঞ্চন পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী রফিক সমর্থকদের উপর হামলা।। ৩৬ দিন পর যুবকের লাশ উত্তোলন- ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের।। শিবচরে আগুনে ১৩ গরু মারা গেছে।।

জগন্নাথপুরে বছরের পর বছর অনাবাদি থাকে কয়েক হাজার হেক্টর জমি

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 05:33:56 pm, Sunday, 18 December 2022
  • 91 বার পড়া হয়েছে

জগন্নাথপুরে বছরের পর বছর অনাবাদি থাকে কয়েক হাজার হেক্টর জমি

নিকেশ বৈদ্য,জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ)।।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বছরের পর বছর অনাবাদি পড়ে থাকে কয়েক হাজার হেক্টর জমি। যা আবাদ হলে জগন্নাথপুরের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী করে আর্থিক লাভবান হতে পারতেন কৃষকরা। নানা সমস্যা ও জটিলতার কারণে এসব জমি আবাদ হচ্ছে না। তবে অসম্ভব কিছু নয়। সমস্যা ও জটিলতার সঠিক কারণ চিহিৃত করে উদ্যোগ নিলে আবারো এসব জমিতে সোনার ফসল ফলবে। এ জন্য প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ ও আন্তরিক প্রচেষ্টা।
জগন্নাথপুর কৃষি অফিস জানান, বর্তমানে জগন্নাথপুরে প্রতি বছর আমন ও বোরো মিলিয়ে ২১ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমি আবাদ হচ্ছে। আর অনাবাদি আছে আমন ২৩০ ও বোরো ৪৩৩ হেক্টর জমি। যদিও স্থানীয় কৃষকদের মতে প্রতি বছর আমন ও বোরো মিলিয়ে প্রায় কয়েক হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে। এর মধ্যে বিগত প্রায় ১৫/২০ বছর ধরে উপজেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম মইয়ার হাওর ও দলুয়ার হাওরের অধিকাংশ জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে। এছাড়া উপজেলার আরো বিভিন্ন ছোট ছোট হাওর ও বাওরের উঁচু-নিচু জমি অনাবাদি থাকে। এক সময় উপজেলার সর্ববৃহত নলুয়ার হাওরের সাথে পাল্লা দিয়ে মইয়ার হাওরে বোরো জমি আবাদ হতো। কালের পরিক্রমায় দিনেদিনে পলিমাটি ভরাট হয়ে অনাবাদি হয়ে যায় মইয়ার হাওর। তবে এবার বন্যায় আরো পলিমাটি ভরাট হওয়ায় মইয়ার হাওরে অনেকে আমন আবাদ করেছেন। নতুন করে আশা জেগেছে মইয়ার হাওরে। এখন থেকে মানুষ আমন আবাদ করতে পারবেন। তবে দলুয়ার হাওরে তুলনামূলক ভাবে জমি আবাদ হয়নি। এক সময় দলুয়ার হাওরে আমন জমি আবাদ হতো। এখন বছরের পর বছর পড়ে থাকে অনবাদি হয়ে। অথচ দলুয়ার হাওরের জমি প্রতি বছরে আমন ও বোরো আবাদ হওয়ার যোগ্য। সঠিক উদ্যোগ, পানি সংকট সহ নানা সমস্যার কারণে হবিবপুর ও সৈয়দপুর গ্রামের মধ্যস্থানে থাকা বিশাল আয়তনের হাওরটি বছরের পর বছর অনাবাদি পড়ে আছে। শুধু তাই নয়, উপজেলার প্রায় সকল অঞ্চলে এভাবে অনেক জমি অনাবাদি থাকে।
১৮ ডিসেম্বর রোববার আলাপকালে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের একাধিক কৃষক ও বর্গাচাষিরা তাদের নাম প্রকাশ না করে জমি অনাবাদি থাকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন। যা কৃষি অফিসের তথ্যের সাথে অনেক বিষয়ে মিল নেই। তাদের প্রথম দাবি জগন্নাথপুরে প্রতি বছর কমবেশি প্রায় কয়েক হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে। দ্বিতীয়ত এসব অনাবাদি জমির অধিকাংশ মালিক হচ্ছেন প্রবাসী ও ধনাঢ্য ব্যক্তি। অতীতে জমির মালিকরা বিশ্বাস করে নিজের আত্মীয়-স্বজনকে এসব জমি আবাদের জন্য দিতেন। তারাও জমিতে উৎপাদিত ফসল থেকে কেয়ার প্রতি ২ থেকে ৩ মণ করে ধান দিতেন জমির মালিককে। এভাবে জমি আবাদ হতো। এক পর্যায়ে বর্গাচাষি স্বজনদের মধ্যে অনেকে জমির মালিককে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ধান দেয়া বন্ধ করে দেন। এতে জমির মালিক ক্ষিপ্ত হয়ে অন্যজনকে আবাদ করতে দেন। তখন সেও প্রথমে এক দুই বার ধান দিলেও পরে আর দেয় না। এতে তারা আরো ক্ষিপ্ত হন এবং কারো উপর ভরসা রাখতে পারেননি। ফলে জমি আবাদ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া জমির মালিকগণের মধ্যে মতের মিল না থাকায় অনেক জমি আবাদ হচ্ছে না। সাথে রয়েছে পানি সংকট, পলিমাটিতে জমি ভরাট হওয়া সহ নানা সমস্যা। এসব জটিলতা ও সমস্যার কারণে প্রতি বছর কয়েক হাজার হেক্টর জমি আবাদ হচ্ছে না। অনাবাদি জমিগুলোর ধরণও অনেকটা বদলে গেছে। জমির আগের সীমানা আইল এলোমেলো হয়ে গেছে। জমিতে মাটি ভরাট হয়েছে। এর মধ্যে অনেক জমি আবাদের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এক কথায় যুগের পর যুগ জমি আবাদ না হলে যা হয়। এখন এসব জমি নতুন করে আবাদ করতে হলে জমিতে অনেক বাড়তি কাজ করতে হবে। তবে দেশ ও জাতির স্বার্থে এসব অনাবাদি জমিগুলো আবারো আবাদ হওয়া প্রয়োজন। এতে দেশ ও দেশের মানুষ উপকৃত হবেন। বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার জমি আবাদের তাগিদ দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সারা দিয়ে গ্রাম-গঞ্জের প্রান্তিক কৃষকেরা জমি আবাদে আরো উৎসাহিত হচ্ছেন। সরকার উচ্চমূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনছে। এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষক জনতা। জমি আবাদে কৃষকদের আরো উৎসাহিত করতে হাওর ও মাঠে গিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সরকারি ভাবে বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে নানা কৃষি উপকরণ। এতে প্রান্তিক কৃষকদের সাথে মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষও এখন জমি আবাদে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। ফলে জগন্নাথপুর উপজেলার বেশিরভাগ জমি আবাদ হচ্ছে। তবে বাকি জমি আবাদের আওতায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রবাসী ও ধনাঢ্য জমির মালিকগণকে এগিয়ে আসতে হবে। যারা জমি আবাদ করলে কথা রাখবে, এ ধরণের মানুষকে চিহিৃত করে জমিগুলো আবাদ করাতে হবে। তা হলেই অধিকাংশ জটিলতার সমাধান হয়ে যাবে। পানি সংকট সহ অন্যান্য সমস্যা মোকাবেলায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, জমির মালিক ও বর্গচাষি কৃষকদের সমন্বিত প্রচেষ্টাই যতেষ্ট।
এ বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, জগন্নাথপুরে প্রতি বছর আমন ও বোরো মিলিয়ে ২১ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমি আবাদ হয়। অনাবাদি থাকে প্রায় ৬৬৩ হেক্টর জমি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পানি সংকট, গোচারণভূমি, উঁচু-নিচু জমি, অবাদে গবাদিপশু বিচরণ সহ নানা কারণে আবাদ হচ্ছে না। যদিও আমাদের পক্ষ থেকে এসব জমি আবাদে কৃষকদের বারবার উৎসাহিত করা হচ্ছে। আমরা চাই জগন্নাথপুরের সকল জমি যেনো আবাদের আওতায় আসে। তাই দিনরাত মাঠে ময়দানে কাজ করছি। ফলে প্রতি বছর ক্রমান্বয়ে আবাদী জমির সংখ্যা বাড়ছে। এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষক ভাইয়েরা।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

সিলেট ও শ্রীমঙ্গলে ঝড় ও বজ্রাপাতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।।

জগন্নাথপুরে বছরের পর বছর অনাবাদি থাকে কয়েক হাজার হেক্টর জমি

আপডেট সময় : 05:33:56 pm, Sunday, 18 December 2022

নিকেশ বৈদ্য,জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ)।।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বছরের পর বছর অনাবাদি পড়ে থাকে কয়েক হাজার হেক্টর জমি। যা আবাদ হলে জগন্নাথপুরের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী করে আর্থিক লাভবান হতে পারতেন কৃষকরা। নানা সমস্যা ও জটিলতার কারণে এসব জমি আবাদ হচ্ছে না। তবে অসম্ভব কিছু নয়। সমস্যা ও জটিলতার সঠিক কারণ চিহিৃত করে উদ্যোগ নিলে আবারো এসব জমিতে সোনার ফসল ফলবে। এ জন্য প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ ও আন্তরিক প্রচেষ্টা।
জগন্নাথপুর কৃষি অফিস জানান, বর্তমানে জগন্নাথপুরে প্রতি বছর আমন ও বোরো মিলিয়ে ২১ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমি আবাদ হচ্ছে। আর অনাবাদি আছে আমন ২৩০ ও বোরো ৪৩৩ হেক্টর জমি। যদিও স্থানীয় কৃষকদের মতে প্রতি বছর আমন ও বোরো মিলিয়ে প্রায় কয়েক হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে। এর মধ্যে বিগত প্রায় ১৫/২০ বছর ধরে উপজেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম মইয়ার হাওর ও দলুয়ার হাওরের অধিকাংশ জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে। এছাড়া উপজেলার আরো বিভিন্ন ছোট ছোট হাওর ও বাওরের উঁচু-নিচু জমি অনাবাদি থাকে। এক সময় উপজেলার সর্ববৃহত নলুয়ার হাওরের সাথে পাল্লা দিয়ে মইয়ার হাওরে বোরো জমি আবাদ হতো। কালের পরিক্রমায় দিনেদিনে পলিমাটি ভরাট হয়ে অনাবাদি হয়ে যায় মইয়ার হাওর। তবে এবার বন্যায় আরো পলিমাটি ভরাট হওয়ায় মইয়ার হাওরে অনেকে আমন আবাদ করেছেন। নতুন করে আশা জেগেছে মইয়ার হাওরে। এখন থেকে মানুষ আমন আবাদ করতে পারবেন। তবে দলুয়ার হাওরে তুলনামূলক ভাবে জমি আবাদ হয়নি। এক সময় দলুয়ার হাওরে আমন জমি আবাদ হতো। এখন বছরের পর বছর পড়ে থাকে অনবাদি হয়ে। অথচ দলুয়ার হাওরের জমি প্রতি বছরে আমন ও বোরো আবাদ হওয়ার যোগ্য। সঠিক উদ্যোগ, পানি সংকট সহ নানা সমস্যার কারণে হবিবপুর ও সৈয়দপুর গ্রামের মধ্যস্থানে থাকা বিশাল আয়তনের হাওরটি বছরের পর বছর অনাবাদি পড়ে আছে। শুধু তাই নয়, উপজেলার প্রায় সকল অঞ্চলে এভাবে অনেক জমি অনাবাদি থাকে।
১৮ ডিসেম্বর রোববার আলাপকালে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের একাধিক কৃষক ও বর্গাচাষিরা তাদের নাম প্রকাশ না করে জমি অনাবাদি থাকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন। যা কৃষি অফিসের তথ্যের সাথে অনেক বিষয়ে মিল নেই। তাদের প্রথম দাবি জগন্নাথপুরে প্রতি বছর কমবেশি প্রায় কয়েক হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে। দ্বিতীয়ত এসব অনাবাদি জমির অধিকাংশ মালিক হচ্ছেন প্রবাসী ও ধনাঢ্য ব্যক্তি। অতীতে জমির মালিকরা বিশ্বাস করে নিজের আত্মীয়-স্বজনকে এসব জমি আবাদের জন্য দিতেন। তারাও জমিতে উৎপাদিত ফসল থেকে কেয়ার প্রতি ২ থেকে ৩ মণ করে ধান দিতেন জমির মালিককে। এভাবে জমি আবাদ হতো। এক পর্যায়ে বর্গাচাষি স্বজনদের মধ্যে অনেকে জমির মালিককে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ধান দেয়া বন্ধ করে দেন। এতে জমির মালিক ক্ষিপ্ত হয়ে অন্যজনকে আবাদ করতে দেন। তখন সেও প্রথমে এক দুই বার ধান দিলেও পরে আর দেয় না। এতে তারা আরো ক্ষিপ্ত হন এবং কারো উপর ভরসা রাখতে পারেননি। ফলে জমি আবাদ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া জমির মালিকগণের মধ্যে মতের মিল না থাকায় অনেক জমি আবাদ হচ্ছে না। সাথে রয়েছে পানি সংকট, পলিমাটিতে জমি ভরাট হওয়া সহ নানা সমস্যা। এসব জটিলতা ও সমস্যার কারণে প্রতি বছর কয়েক হাজার হেক্টর জমি আবাদ হচ্ছে না। অনাবাদি জমিগুলোর ধরণও অনেকটা বদলে গেছে। জমির আগের সীমানা আইল এলোমেলো হয়ে গেছে। জমিতে মাটি ভরাট হয়েছে। এর মধ্যে অনেক জমি আবাদের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এক কথায় যুগের পর যুগ জমি আবাদ না হলে যা হয়। এখন এসব জমি নতুন করে আবাদ করতে হলে জমিতে অনেক বাড়তি কাজ করতে হবে। তবে দেশ ও জাতির স্বার্থে এসব অনাবাদি জমিগুলো আবারো আবাদ হওয়া প্রয়োজন। এতে দেশ ও দেশের মানুষ উপকৃত হবেন। বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার জমি আবাদের তাগিদ দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সারা দিয়ে গ্রাম-গঞ্জের প্রান্তিক কৃষকেরা জমি আবাদে আরো উৎসাহিত হচ্ছেন। সরকার উচ্চমূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনছে। এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষক জনতা। জমি আবাদে কৃষকদের আরো উৎসাহিত করতে হাওর ও মাঠে গিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সরকারি ভাবে বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে নানা কৃষি উপকরণ। এতে প্রান্তিক কৃষকদের সাথে মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষও এখন জমি আবাদে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। ফলে জগন্নাথপুর উপজেলার বেশিরভাগ জমি আবাদ হচ্ছে। তবে বাকি জমি আবাদের আওতায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রবাসী ও ধনাঢ্য জমির মালিকগণকে এগিয়ে আসতে হবে। যারা জমি আবাদ করলে কথা রাখবে, এ ধরণের মানুষকে চিহিৃত করে জমিগুলো আবাদ করাতে হবে। তা হলেই অধিকাংশ জটিলতার সমাধান হয়ে যাবে। পানি সংকট সহ অন্যান্য সমস্যা মোকাবেলায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, জমির মালিক ও বর্গচাষি কৃষকদের সমন্বিত প্রচেষ্টাই যতেষ্ট।
এ বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, জগন্নাথপুরে প্রতি বছর আমন ও বোরো মিলিয়ে ২১ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমি আবাদ হয়। অনাবাদি থাকে প্রায় ৬৬৩ হেক্টর জমি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পানি সংকট, গোচারণভূমি, উঁচু-নিচু জমি, অবাদে গবাদিপশু বিচরণ সহ নানা কারণে আবাদ হচ্ছে না। যদিও আমাদের পক্ষ থেকে এসব জমি আবাদে কৃষকদের বারবার উৎসাহিত করা হচ্ছে। আমরা চাই জগন্নাথপুরের সকল জমি যেনো আবাদের আওতায় আসে। তাই দিনরাত মাঠে ময়দানে কাজ করছি। ফলে প্রতি বছর ক্রমান্বয়ে আবাদী জমির সংখ্যা বাড়ছে। এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষক ভাইয়েরা।