![](https://dainikajkerbangla.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
আমিরুল হক,
নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি ।।
সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয় থেকে নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে সুস্থ চিত্ত বিনোদনের কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য দরকার নাচ, গান, নাটক ও কবিতা আবৃতির মতো চর্চা।
কিন্তু নীলফামারীর সৈয়দপুরে ঝিমিয়ে পড়েছে সাংস্কৃতিক অঙ্গন। আগের মতো ভেসে আসে না হারমোনিয়ামের সুর। শোনা যায় না তবলার বোল। হয় না নাটক মঞ্চস্থ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরে ১৫টিরও বেশি সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। এখানকার সাংস্কৃতিক ইতিহাস খুবই সমৃদ্ধ। আছে ১০০ বছরের পুরাতন শিল্প সাহিত্য সংসদ নামে একটি সংগঠন।
একসময় এসব সংগঠনের উদ্যোগে হরহামেশাই বিভিন্ন সাংস্কতিক অনুষ্ঠান হলেও এখন এসব সংগঠনের তেমন অস্তিত্ব নেই। থিয়েটার সৈয়দপুর এক সময় নাট্যঙ্গনকে এগিয়ে নিয়ে গেলও এখন তেমন কার্যক্রম চোখে পড়ে না।
সৈয়দপুরে দুটি অডিটোরিয়াম মুর্তুজা ইন্সটিটিউট ও ফিদা আলী মিলনায়তনে সাংস্কুতিক অনুষ্ঠানের জন্য অনেক আগে থেকে বুকিং দিতে হত। সেই মিলনায়তন এখন ময়লা আবর্জনার স্তুপে পরিনত হয়েছে। মুর্তুজা ইন্সটিটিউট এখন কমিউনিটি সেন্টর হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
করোনা পরিস্থিতি ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর কার্যক্রম সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন উপজেলার অন্যতম সংগঠন ধ্রæপদী সংগীত বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ময়নুল হোসেন প্রামানিক।
তিনি বলেন, করোনার ছোবলে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম দুই বছর ধরে বন্ধ আছে। এ ছাড়া অনুষ্ঠান করতে গেলে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুমতি নেওয়ার ঝামেলা তো আছেই। আর ব্যয় বহন করাও কঠিন। কারণ উপজেলা পর্যায়ে টিকিট কেটে অনুষ্ঠান দেখার দর্শক একেবারে নেই। সংগীত ও আবৃত্তি চর্চায় আগ্রহী ছেলেমেয়েরও অভাব রয়েছে।
রেনেসাঁ থিয়েটার সদস্য সিরাজুল হক চন্দন বলেন, নতুন প্রজন্মের মঞ্চের প্রতি আগ্রহ কমেছে। আনাড়ি শিল্পীরা নি¤œমানের নাটক, টেলিফিল্ম নির্মাণ করে ফেসবুক, ইউটিউবে প্রচার করছে। তাতেই মানুষের আগ্রহ বেশি।
বন্ধন শিল্পী গোষ্টীর সাধারণ সম্পাদক রইচ উদ্দিন জানান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে গেলে মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয়। স্থানীয়ভাবে এই টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। এসব অনুষ্ঠানে প্রষ্ঠপোষকতার অভাব রয়েছে।
উপজেলা পর্যায়ে যাঁরা সংগীত চর্চা করেন, তাঁরা অবহেলিত বলে উল্লেখ করেন সংগীত শিল্পী হোসনে আরা লিপি।
সমাজকে সুস্থ রাখতে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চায় কিশোর, তরুণ ও যুবকদের সম্পৃক্ত করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন থিয়েটার সৈয়দপুরের সভাপতি ও সৈয়দপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান হাফিজ। তাঁর মতে, এ কাজে দরকার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা।