
দৈনিক আজকের বাংলা ডেস্ক।।
এখনই ইউক্রেনে যুদ্ধে যাওয়া উচিত নয় ব্রিটিশদের – সশস্ত্র বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল স্যার টনি রাদাকিন
ব্রিটিশদের এখনই ইউক্রেনে যুদ্ধে যাওয়া নয় বরং যুক্তরাজ্য থেকে তাদের সাহায্য করা উচিত বলে মন্তব্য করেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল স্যার টনি রাদাকিন।
বিবিসি’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি ইউক্রেনের নো ফ্লাই জোন ঘোষণার আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এ প্রস্তাব কৌশলগতভাবে সঠিক নয় বরং এমন পদক্ষেপ যুদ্ধ বাড়িয়ে দেবে। পশ্চিমারা যা করছে তা ‘সঠিক কাজ’ বলে বিশ্বাস রাখতে বলে তিনি জানান, রাশিয়ার এই আক্রমণ সঠিক পথে যাচ্ছে না, রাশিয়া তার শক্তি হারিয়ে ফেলছে এবং তারা এ আক্রমণ বেশিদিন চালাতে পারবে না।
তিনি বলেন, ব্রিটিশদের বন্ধুকের নলের শব্দ শুনে এখন যুদ্ধে যাওয়ার তাড়াহুড়ো করার প্রয়োজন নেই। কিছু নিয়মিত এবং সংরক্ষিত ব্রিটিশ সৈন্যদের ইউক্রেন যুদ্ধে যোগ দেয়ার ইচ্ছা রাশিয়ার বিজয়ের প্রোপাগান্ডাকে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করবে।
গত সপ্তাহে চিফ অব ডিফেন্স পিপল লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেমস সুইফট চেইন অফ কমান্ডকে দেয়া বার্তায় জোর দিয়ে বলেন, যুক্তরাজ্যের সামরিক সদস্যদের ইউক্রেনে যাওয়ার কোনো অনুমোদন দেয়া হয়নি। যদি সদস্যদের কেউ ইউক্রেনে যাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকে, তবে তা জানার সাথে সাথে সার্ভিস পুলিশকে অবগত করার নির্দেশও দেন তিনি।
এই বার্তা সতর্ক করে যে, যদি ব্রিটিশ সামরিক সদস্য ইউক্রেনে যুদ্ধে যায় তবে তারা কেবল নিজেদের জীবনের ঝুঁকিই বাড়াবে না বরং যুক্তরাজ্যকেও রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ভুল ধারণা তৈরি করবে।
স্যার টনি বলেন, এটি হবে বেআইনি এবং অসহায়পূর্ণ।
তবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানায়, এখনো পর্যন্ত তাদের পূর্ণকালীন কোনো সামরিক সদস্য অনুপস্থিত নেই, তবে সংরক্ষিত সদস্যরা অন্যান্য কাজ করে বলে তাদের হিসেব রাখা কঠিন।
তিনি আরও বলেন, রাশিয়া এখন ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, তাদের মনোবলও এখন ভেঙে পড়েছে, তাছাড়া তাদের সরঞ্জামের সংকট এবং রাজধানী কিয়েভের সামনে বিশাল সামরিক কনভয় আটকে থাকায় তাদের পরিস্থিতি খুব একটা ভালো নয়।
তিনি দাবি করেন, আফগানিস্তানে ২০ বছরে যুক্তরাজ্য যত সৈন্য হারিয়েছিল, ক্রেমেলিন এক সপ্তাহেই সে পরিমাণ সৈন্য হারিয়েছে এবং রুশ বাহিনীর প্রধান উপাদান ধ্বংস করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলে, পশ্চিমা দেশগুলোর নো ফ্লাই জোন ঘোষণার অনীহা রাশিয়াকে শহরগুলো বোমা বিস্ফোরণে সবুজ সংকেত দিয়েছে।
অ্যাডমিরাল রাদানকিন বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ কখনো ফলপ্রসূ হবে না। কারণ রুশ বাহিনীর বেশিরভাগ হামলা বিমান থেকে নয় বরং আর্টিলারি থেকে করছে। তাই নো ফ্লাই জোন ঘোষণা করা অর্থ হবে, রাশিয়ান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরিয়ে নেয়া এবং রাশিয়ার বিমানগুলোকে শ্যুট করা যা এই যুদ্ধকে আরও উস্কানি দিবে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও একই বার্তা দেন গতকাল। তাতে তিনি বলেন, নো ফ্লাই জোন ঘোষণার অর্থ হবে ওই দেশটি সরাসরি যুদ্ধ অংশগ্রহণ করছে।
অ্যাডমিরাল রাদানকিন পুতিনের এই বক্তব্যকে উদ্ভট ও হাস্যকর বলে উল্লেখ করে, তার এই মন্তব্য দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত হবে না বলে উল্লেখ করেন এবং পশ্চিমা দেশগুলোকে শান্ত থাকতে এবং দায়িত্বশীলতা বজায় রাখতে বলেন।